|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:১৮ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:২২ অপরাহ্ণ

হামাসের হাতে কত জিম্মি এখনো রয়ে গেছেন?


হামাসের হাতে কত জিম্মি এখনো রয়ে গেছেন?


অনলাইন ডেস্ক:-


 

যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গতকাল শনিবার গাজা থেকে আরও ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

 


 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, নজিরবিহীন এক হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলের দক্ষিণ অঞ্চলে আক্রমণ চালায় হামাস। তখন প্রায় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি নাগরিক ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, নেপালসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিলেন।
 

যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের ফলে এখন পর্যন্ত ১৩৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে সাত দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ১০৫ থেকে ১০৭ জন জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।
 

সম্প্রতি, গত বৃহস্পতিবার হামাস চার জিম্মির মৃতদেহ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে। পাশাপাশি, গাজায় অভিযান চালানোর সময় ইসরায়েলি সেনারা ৪০ জন জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ ইসরায়েলের অভিযানের সময় নিহত হন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) স্বীকার করেছে যে কিছু জিম্মি ‘ভুলবশত’ তাদের হামলার শিকার হয়েছেন।
 

হামাসের দাবি, গাজায় যেসব জিম্মি নিহত হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই ইসরায়েলি হামলার ফলে প্রাণ হারিয়েছেন।
 

বর্তমানে, গাজায় আরও ৬১ জন জিম্মি থাকার কথা জানা গেছে। এর মধ্যে ইসরায়েল ৩১ জনকে মৃত ঘোষণা করেছে। ইসরায়েলি সেনারা অভিযান চালিয়ে আটজনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন।
 

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনো আটক থাকা জিম্মিদের মধ্যে পাঁচজন ইসরায়েলের নাগরিক নন। এদের মধ্যে তিনজন থাইল্যান্ড, একজন নেপাল এবং একজন তানজানিয়ার নাগরিক। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে থাইল্যান্ডের একজন ও নেপালের নাগরিক এখনো জীবিত আছেন।
 

প্রায় ১৬ মাস ধরে চলা সংঘাতের পর, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় একটি আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। প্রথম ধাপের ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।
 

গত শনিবার মুক্তি পাওয়া ছয়জন জিম্মি হলেন—এলিয়া কোহেন, ওমের শেম-তোভ, ওমের ওয়েনকার্ট, তাল শোহাম, আভেরা মেনজিস্তু এবং হিশাম আল-সাইয়েদ। এদের মধ্যে আভেরা ও হিশাম বেসামরিক নাগরিক এবং তারা প্রায় এক দশক ধরে গাজায় বন্দি ছিলেন।
 

যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় হামাস এখন পর্যন্ত ২৫ জন জিম্মিকে কয়েক ধাপে মুক্তি দিয়েছে বলে এএফপির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
 

এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায়, ছয় সপ্তাহের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ছাড়ার কথা রয়েছে। একইসঙ্গে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী লরিকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
 

যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে, যা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে শুরু হবে। এই ধাপেই মুক্তি পাবে পুরুষ ইসরায়েলি সেনারা। তৃতীয় ও শেষ ধাপে গাজার পুনর্গঠন শুরু হবে, যা শেষ হতে কয়েক বছর লাগতে পারে।
 

প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি আগামী ২ মার্চ শেষ হওয়ার কথা। দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলাপ-আলোচনা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনায় বসতে এবং সব জিম্মি ও মৃতদেহ মুক্তি দিতে প্রস্তুত।
 

দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতির আলোচনার জন্য মিসরের রাজধানী কায়রোতে উভয় পক্ষের প্রতিনিধি দলের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তবে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রতিনিধি পাঠাতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
 

ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ২৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৭৩৩ জন। গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরা হচ্ছে।
 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম তীরের শরণার্থী শিবিরে চালানো হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং বুলডোজার দিয়ে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫