চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের কলমবিরতি কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। যদিও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, খালাস কার্যক্রম কর্মসূচির বাইরে থাকবে, বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। ফলে বন্দরে জমে গেছে প্রায় ৪৩ হাজার কনটেইনার।
ইয়ার্ডে জায়গার অভাবে বন্দরে নোঙর করতে পারেনি আরও ১৮টি জাহাজ। এই জাহাজগুলো এখন বহিনোঙরে অপেক্ষমাণ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, “শুল্কায়ন ও পরীক্ষণের মতো কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কনটেইনার খালাস সম্ভব হচ্ছে না। এতে জাহাজ থেকেও কনটেইনার খালাস ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পুরো বন্দরে পড়ছে।”
তিনি আরও জানান, কর্মসূচি শুরুর আগে বন্দরে কনটেইনারের সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার একক, যা শনিবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজারে। সমুদ্রে আরও কনটেইনারবাহী জাহাজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “ঈদের আগ মুহূর্তে এমন কর্মসূচি আমাদের বিপাকে ফেলছে। কারখানায় কাঁচামাল পৌঁছাতে পারছি না সময়মতো, এতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। যার ফলে রপ্তানিও সময়মতো করতে পারব না। এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্ক হার আমাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, কলমবিরতির আগে ৩৭ হাজার কনটেইনার খালাসের অপেক্ষায় ছিল। বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয় ৪৩ হাজার। শুক্রবার কর্মসূচি না থাকায় কিছুটা খালাস হয়ে সংখ্যা নেমে আসে ৪১ হাজারে। তবে শনিবারের কর্মসূচির প্রভাবে এই সংখ্যা আবার বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের মুখপাত্র মো. নাসির উদ্দিন জানান, “কর্মবিরতির সরাসরি প্রভাব বন্দরের কার্যক্রমে পড়ছে। প্রতিদিন যে হারে খালাস হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না। ফলে কনটেইনার জট ক্রমেই বাড়ছে। তবে বন্দর নিরবচ্ছিন্নভাবে ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকা সত্ত্বেও কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, ১৪ মে থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে কাস্টমস কর্মকর্তা–কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছেন। প্রাথমিকভাবে অর্ধদিবস কর্মসূচি থাকলেও শনিবার পুরো কার্যদিবসেই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শুল্কায়নের কক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেখা যায়নি, ফলে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা নথিপত্র নিয়ে ঘুরলেও কোনো কাজ সম্পন্ন হয়নি।