|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৫ জুন ২০২৫ ১১:০০ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৫ জুন ২০২৫ ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: শান্তির দিকে অগ্রগতি, না কি বড় যুদ্ধের আগমনী ঘণ্টা?


ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: শান্তির দিকে অগ্রগতি, না কি বড় যুদ্ধের আগমনী ঘণ্টা?


অনলাইন ডেস্ক:-


 

গত ১৩ জুন আকস্মিকভাবে ইরানে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিতে চালানো এই হামলায় দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনে পরিচালিত এই হামলার জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে।
 

এই টানটান উত্তেজনার মধ্যেই মাত্র ১২ দিনের মাথায়—২৪ জুন—ঘোষণা এলো যুদ্ধবিরতির। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে অভিহিত করেছেন ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে এবং বলেছেন, উভয় পক্ষই ‘নিজ নিজ শর্তে’ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
 

যুদ্ধবিরতি, কিন্তু স্থায়ী শান্তি নয়

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। ট্রাম্পের ঘোষণার চার ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েল দাবি করে, তারা ইরানের দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে এবং এর জবাবে তেহরানের কাছে একটি রাডার স্টেশনে হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্প এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দুই দেশ এতদিন ধরে লড়াই করছে যে তারা নিজেরাই জানে না তারা কী করছে।”
 

ইরান অবশ্য ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে। পরে উভয়পক্ষ ফের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় এবং ট্রাম্প আশ্বস্ত করেন, ইসরায়েল আর কোনো হামলা চালাবে না।
 

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অনড় ইরান

সংঘাতের মূলে ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। পশ্চিমা শক্তিগুলোর চাপ ও আলোচনার মুখেও ইরান এ বিষয়ে অনমনীয় থেকে গেছে। হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। তেহরানের সংসদ ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের বিল অনুমোদন করেছে।
 

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান হয়তো আবার একটি চুক্তির আলোচনায় ফিরতে পারে, তবে তা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক চাপে এবং পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায়। ২০১৫ সালের জেসিপিওএ চুক্তির মতো নতুন কোনও সমঝোতা আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে রয়েছে গভীর সংশয়। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই পূর্বের চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিল এবং ইসরায়েল বরাবরই এ ধরনের চুক্তির বিরোধিতা করে আসছে।
 

ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখনও কঠোর। ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরানকে আর কোনওভাবেই পারমাণবিক কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। ফলে, তেহরান যদি অনড় অবস্থানে থাকে, তবে আবারও সামরিক সংঘর্ষ শুরু হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
 

শেষ কথা

যুদ্ধবিরতির পর আপাতত বড় কোনো হামলা না ঘটলেও ইরান-ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা কমেছে বলা যাবে না। বরং এটি হতে পারে বড় কোনো সংঘাতের আগে একটি ‘কৌশলগত বিরতি’। বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে—এই বিরতির পর আসলেই শান্তির আলো দেখা যাবে, না কি মধ্যপ্রাচ্য জড়িয়ে পড়বে আরও ভয়াবহ এক যুদ্ধে?


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫