কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আগেভাগেই জমে ওঠেছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পশুর বাজার আনোয়ারা তৈলারদ্বীপ সরকার হাট। বাজারটিতে আনোয়ারা ছাড়াও বাঁশখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতাকানিয়া, কর্ণফুলী, কক্সবাজার জেলার পেকুয়াসহ চট্টগ্রাম নগর থেকে ক্রেতারা এসে কোরবানির পশু ক্রয় করেন। এ ছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীরাও কোরবানের পশু কিনতে চলে আসেন এ বাজারে। বাজারে কেউ যেন প্রতারিত না হয় সে জন্য রাখা হয়েছে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন।
জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় তিনটি স্থায়ী ও নয়টি অস্থায়ীসহ ১২টি পশুর হাট বসানো হয়েছে। এরমধ্যে তৈলারদ্বীপ পশুর হাট, বটতলী রুস্তমহাট ও চাতরী চৌমুহনী বাজার স্থায়ী পশুর হাটের ইজারা রয়েছে। এ ছাড়া রায়পুর ওয়াহেদ আলী চৌধুরী বাজার, জৈদ্দারহাট, গহিরা দোভাষীর হাট, আন্নর আলী সিকদার হাট, বরুমচড়া কানু মাঝির হাট, মিন্নত আলী দোভাষীর হাট, কেবি ছাত্তার হাট, মালঘর বাজার ও পালের হাটে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে পশু কেনাবেচা হবে।
সরকারহাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরু, ছাগলের পাশাপাশি বাজারে এসেছে প্রচুর মহিষ।
বেচাকেনাও ভালো। তবে এটি আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এখানে কোরবানির বাজার ছাড়াও সারা বছর গরু, ছাগল বিক্রি হয়। খুচরা বিক্রেতারা সরকার হাট থেকে কিনে বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করেন।
এ হাটের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু কিনে মজুদ করে রেখেছেন। বাজারও বেশ জমে উঠেছে। গরু ব্যবসায়ী মো. মোরশেদ বলেন, হাটে বড় ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। এবার হাটে যেসব গরু বেপারিরা নিয়ে এসেছেন সবগুলোই দেশি। অধিকাংশই নিজেদের খামারের গরু।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, বাকলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু নিয়ে এসেছেন বেপারিরা। এ ছাড়া কুষ্টিয়া, বগুড়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকেও গরু নিয়ে এসেছেন অনেকে। শুধু কোরবানির মৌসুম নয় বরং সারা বছরই সরগরম থাকে সরকারহাট পশুর বাজার। সপ্তাহের সোম ও শুক্রবার বাজারের নির্ধারিত দিন হলেও কোরবানে সপ্তাহজুড়েই চলে পশু বেচাকেনা।
বাজারে আসা গরু বিক্রেতা বাঁচা মিয়া জানান, বাজারের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে কোরবানি উপলক্ষে অনেক গরু বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। একেকজন পাইকারি ব্যবসায়ী দেড় থেকে দুই’শ গরু এনে রেখেছেন। বিশেষ করে বাঁশখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, চকরিয়া, পেকুয়াসহ গরুর খামারিরাও সরকার হাটে এসে গরু বিক্রি করেন।
বাজারের ইজারাদার ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ বলেন, তৈলারদ্বীপ সরকার হাটে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা গরু বিক্রি করতে আসেন এবং এ হাট থেকে অনেক বেপারিরা পাইকারি দামে গরু কিনে বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যান।
তিনি আরো বলেন, ‘ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে কেউ যেন প্রতারিত না হয়, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিনও রাখা হয়েছে এ বাজারে। আমরা ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। আশা করি, বিক্রেতারা স্বচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারবেন।’
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে উপজেলায় ১২টি পশুর হাট বসে। এসব হাটে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিনও রাখা হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন প্রতারিত হতে না পারে সে জন্য মোবাইল কোর্ট টহলে থাকবে।