বাংলাদেশে পাঁচ দিনের সফরে ব্রিটিশ বাণিজ্য দূত রোজি উইন্টারটন

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারে নানা কর্মসূচি.....

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণে পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন। রোববার (৫ অক্টোবর) তিনি ঢাকায় পৌঁছান বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ হাইকমিশন।
 

হাইকমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সফরকালে ব্যারোনেস উইন্টারটন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংস্কার, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদারত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
 

এ ছাড়াও তিনি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন—যাদের মধ্যে আছেন বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিরা। এসব বৈঠকে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন যাত্রায় অংশীদার হওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হবে।
 

ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থানকালে ব্যারোনেস উইন্টারটন বিমান চলাচল, উচ্চশিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। চট্টগ্রামে তিনি যুক্তরাজ্য-সমর্থিত বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোও পরিদর্শন করবেন, যেগুলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালীকরণ এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।
 

সফরকালে যুক্তরাজ্যের Developing Countries Trading Scheme (DCTS)–এর গুরুত্বও তুলে ধরা হবে। এই কর্মসূচির আওতায় ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যা এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে সহায়ক হবে।
 

এ ছাড়া, তিনি British International Investment (BII)—যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থা—ও তাদের স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব আলোচনায় সবুজ অর্থায়ন ও টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা গুরুত্ব পাবে।
 

ব্রিটিশ হাইকমিশনের মতে, এই সফরের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমকে সমর্থন করা এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির জন্য দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও জোরদার করা।
 

সফর সম্পর্কে ব্যারোনেস উইন্টারটন বলেন,

“যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি গতিশীল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন যাত্রাকে সহায়তা করা এবং উভয় দেশের জন্য উপকারী নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুযোগ অন্বেষণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতেই আমি এখানে এসেছি।”

তিনি আরও বলেন,

“আমি যুক্তরাজ্য-সমর্থিত বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো সরাসরি দেখতে আগ্রহী, যেগুলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে, সরবরাহ শৃঙ্খলকে মজবুত করছে এবং দুই দেশের অর্থনীতিতে বাস্তব মূল্য সংযোজন করছে।”

ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন,

“বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূতের ছয় মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় সফর। এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির প্রতি যুক্তরাজ্যের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন। দুই দেশের বাণিজ্য অংশীদারত্ব দিন দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে, এবং আমরা পারস্পরিক সমৃদ্ধির জন্য এই সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে আগ্রহী।”