কেরানীগঞ্জে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি এক মাস ধরে

প্রকাশকালঃ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৩৬ অপরাহ্ণ ১৯৫ বার পঠিত
কেরানীগঞ্জে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি এক মাস ধরে

ঢাকার কেরানীগঞ্জে মডেল থানাধীন থানা রোডের সুয়ারেজ লাইনটি প্রায় এক মাস ধরে ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। একবার বৃষ্টি হলেই রাস্তা তলিয়ে যাচ্ছে ড্রেনের পানিতে। তার সাথে প্রতিদিন ড্রেনের পানি জমে সড়কটি এখন যেন খালে পরিণত হয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, এখন বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই থানা রোডের সুয়ারেজ লাইনের পানি রাস্তা উঠে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে করে ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানিতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীর। এ ছাড়া পথচারীদের ও এই নোংরা পানি মাড়িয়ে রাস্তা পার হতে হচ্ছে।

নোংরা পানির কারণে আশেপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে ডেঙ্গু ও অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। সরেজমিন থানা রোড এলাকা গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার মূল সড়কে নোংরা পানিতে ভরে গেছে। দুর্গন্ধে টেকা দায় এখানে। রিকশা ও ভ্যানগাড়িতে জনপ্রতি ১০ টাকা করে নিয়ে এই দুই মিনিটের রাস্তা পারাপার করছেন চালকরা।


থানায় সেবা নিতে আসা সেবাপ্রত্যাশীরাও এই নোংরা পানি মাড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। স্থানীয় দোকানদার, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও মসজিদে নামাজে আসা সবাইকেই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এই রাস্তার কারণে।

মো. আলামিন  নামে এক বাসিন্দা বলেন, প্রায় এক মাস ধরে পানি জমে আছে সড়কে। এই সড়কের পাশেই আমার ওষুধের দোকান রয়েছে। এই দোকান করেই আমার সংসারের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।


আজ এক মাস ধরে পানি জমে থাকায় কোনো রোগী আসে না। কিভাবে সংসার চালাবো বা কিভাবেই বাসা ও দোকান ভাড়া দেবো।  এই সড়কের সুয়ারেজ লাইন ভাঙা। এখন বৃষ্টির মৌসুম, ভাঙা সুয়ারেজের কারণে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে রাস্তায় তিন-চার দিন পর্যন্ত থাকছে। এর মধ্যে প্রতিদিন সুয়ারেজ লাইনের পানি উঠতেছে। এই এলাকার মেম্বার-চেয়ারম্যানরা কেউ এগিয়ে আসছেন না এই সমস্যা সমাধানে। এরকম আর কিছু দিন চলতে থাকলে হয় মরতে হবে না হয় রাতের আঁধারে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া-বাট্টা না দিয়ে পালাতে হবে।


মো. সলিম নামে অপর একজন জানান, এই রাস্তাটি একই সাথে জিনজিরা ইউনিয়ন ও আগানগর ইউনিয়নের বর্ডার হওয়ায় ইউরিয়ন পরিষদ থেকে কেউ কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিষয়টি যথাযথ  প্রশাসনের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সড়কটি যে ইউনিয়নের ই হোক না কেন সমস্যা তো এলাকার ই। বিষয়টি সমাধানে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত। এই সড়কের পাশে ৩০-৩৫ টি বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িগুলোতে প্রায় ২ শতাধিক  পরিবার বসবাস করেন। প্রতিদিন এখানে বসবাসকারী লোকজনদের এই নোংরা পানি দিয়ে  যাওয়া আসা করতে হচ্ছে।  এতে করে তাদের যেমন রোগবালাই বেড়ে যাচ্ছে  তেমনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। এরই মধ্যে দু- একটি ভ্যানগাড়ী পানি পার করছে আসা যাওয়া ১০+১০ বিশটাকা করে।

পারুল আক্তার  নামের এক স্কুল ছাত্রী বলেন, আমি সপ্তম শ্রেনীতে পড়ি। সামনে আমার পরিক্ষা এই নোংড়া পানির কারেন আমি স্কুলেরযেতে পারছি না। প্রথম প্রথম কয়েক দিন পানি দিয়ে হেটে স্কুলে গিয়েছিলাম। পরে দেখি আমার পায়ে ঘা হয়ে গেছে। এরপর থেকে আমি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমি আশা করছি এ এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা দ্রুত সড়কটি সংস্কার করে আমাদের পড়া লেখা করার সুযোগ করে৷ দিবেন।


এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মামুন-অর রশিদ জানান, দীর্ঘ দিন ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সগকের পাশাপাশি  আমার থানার ভিতরেও পানি জমে থাকছে।  প্রতিদিন সেলো মেশিন লাগিয়ে আমাকে এই পানি ফেলতে হচ্চে।  ময়লা পানির কারনে আমাদের অনেক পুলিশ সদস্যদের ও নানা রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সল বিন করিম বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই৷ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে কথা  হয়েছে অতি শিগ্রই এই পানির সমাধান করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন,আমরা ইতিমধ্যে নদীর পার থেকে  কাজ শুরু করে দিয়েছি আমরা। পুরাতন সুয়ারেজ লাইনের পাশাপাশি নতুন করা সুয়ারেজ লাইনের কাজ শুরু করেছি। কাজটির শেষ হলে এই নোংরা পানির সমাধান হয়ে যাবে।