ঋণমান কমালো সাত ব্যাংকের মুডিস

প্রকাশকালঃ ০১ জুন ২০২৩ ১২:২১ অপরাহ্ণ ৫৯ বার পঠিত
ঋণমান কমালো সাত ব্যাংকের মুডিস

বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার এক দিন পর দেশের বেসরকারি খাতের সাত ব্যাংকের রেটিংও বা ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস। ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ণ ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

এর মধ্যে মার্কেন্টাইল ছাড়া অন্য ছয় ব্যাংকের ‘দীর্ঘমেয়াদি ডিপোজিট’ ও ‘ইস্যুয়ার রেটিং’ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে মুডিস ব্যাংকগুলোর ঋণমান কমানোর ঘোষণা দেয়। গত ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডিস।

গত মঙ্গলবার মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমানও কমিয়ে দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর বিষয়ে বলেছে, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ কারণে মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১-এ নামিয়েছে। তবে বাংলাদেশের জন্য মুডিস তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে। এরপর গতকাল বুধবার বেসরকারি সাত ব্যাংকের ঋণমান কমানোর ঘোষণা আসে।


জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘একটি দেশের ঋণমান কমিয়ে দিলে সেই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণমানেও তার প্রভাব পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি সাত ব্যাংকের ঋণমান কমানো হয়েছে। মুডিস বাংলাদেশে এ সাত ব্যাংকেরই ঋণমান যাচাই করে। ঋণমান কমিয়ে দেওয়ায় বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে খরচ বাড়তে পারে।’

এর আগে গত ডিসেম্বরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের মান কমিয়ে দেয় মুডিস। তখন এক বার্তায় তারা জানিয়েছিল, এসআইবিএলের বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের মান বি৩ থেকে নামিয়ে বি২ করা হয়েছে এবং ব্যাংকটির বেসলাইন ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট (বিসিএ) বি৩ থেকে নামিয়ে সিএএ ১ করা হয়। একই সঙ্গে এসআইবিএলের ঋণমানের পূর্বাভাসও পরিবর্তন করে। তখনই সাত ব্যাংকের ঋণমান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডিস।


মুডিসের ঘোষণার পর এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এমনটি হতে পারে, এটা অনুমেয় ছিল। বিদেশি ঋণ আনতে সুদহারে এর প্রভাব পড়তে পারে। পাশাপাশি বিদেশি ব্যবসায় খরচ বাড়তে পারে। এটা কাটাতে উদ্যোগ নিতে হবে। তবে টাকার ঋণে এর কোনো প্রভাব নেই।’

এদিকে গতকাল এক বিবৃতিতে মুডিস জানিয়েছে, সাত ব্যাংকের মধ্যে এনসিসি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং বি৩ থেকে বি২ করা হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি আমানত ও ইস্যুয়ার রেটিং বি৩ থেকে বি২ করা হয়েছে। এর অর্থ ব্যাংকটির সম্পদের মান ও মুনাফা কমলেও শক্তিশালী মূলধন ও তারল্যের কারণে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আছে।

জানতে চাইলে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। দেশের ঋণমান কমে যাওয়ায় ব্যাংকের ঋণমানেও তার প্রভাব পড়ল। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে খরচ বেড়ে যেতে পারে।’