ঢাকার উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে এ দুর্ঘটনার পরপরই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স সংবাদ প্রকাশ করে শিরোনাম দেয়:
"At least nineteen killed, scores injured as Bangladesh air force jet crashes into college campus"
পরবর্তীতে নিহতের সংখ্যা ২৭-এ উন্নীত হওয়ার কথা জানিয়ে আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সর্বশেষ প্রতিবেদনে তারা প্রশ্ন তোলে:
"How did a Bangladesh fighter jet crash into a school campus?" — যেখানে দুর্ঘটনার কারণ ও প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করা হয়। প্রতিটি প্রতিবেদনের সঙ্গে ছিল ভয়াবহ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান।
সিএনএন তাদের শিরোনামে লেখে:
"Distraught students demand answers after plane crash turned Bangladesh school into 'death trap'"
এতে উল্লেখ করা হয়, দুর্ঘটনায় বিচলিত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ ও কষ্টে প্রশ্ন তুলছে—কীভাবে নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন এত বড় ট্র্যাজেডিতে পরিণত হলো?
বিবিসি এক শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করে শিরোনাম দেয়:
"'My friend died right in front of me': Student describes moment air force jet crashed into school"
এখানে মাইলস্টোনের ছাত্র ফারহান হাসানের চোখের সামনে তার বন্ধুর মৃত্যু দেখার হৃদয়বিদারক বিবরণ তুলে ধরা হয়।
আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখে:
"Bangladesh air force plane crashes into college campus, killing at least thirty-one"
তারা উল্লেখ করে, হতাহতদের বেশিরভাগের বয়স ৮ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়,
"Bangladesh: Many killed after plane crashes into school"
এটি ছিল গত ৪ দশকের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি বলে তারা মন্তব্য করে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানায়,
"Bangladesh observes mourning day after jet crash kills thirty-one"
তারা উল্লেখ করে, বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে এবং মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩১-এ পৌঁছেছে।
ভারতের এনডিটিভি শিরোনাম দেয়:
"Bangladesh school jet crash death count rises to twenty-seven, dozens still critical"
পাকিস্তানের ডন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়:
"At least twenty-seven dead, mostly children, in Bangladesh air force jet crash"
দুই সংবাদমাধ্যমই জানায়, যুদ্ধবিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং বিস্ফোরণের ফলে স্কুল ভবন কেঁপে ওঠে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়,
সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি। প্রশিক্ষণ চলাকালীন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরের একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়।
দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে খবর পায়। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।
দুর্ঘটনার পরপরই ভবনে আগুন ধরে যায়। চারপাশে তখন আর্তনাদ, কান্না, সন্তান খুঁজতে ব্যাকুল অভিভাবকদের আহাজারি হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি করে।
নিহত: ৩১ জন (আইএসপিআর সূত্রে)
আহত: ১৬৫ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন