শেখ হাসিনাকে উৎখাত বৈধ ছিল, ষড়যন্ত্র নয়: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা কোনো ষড়যন্ত্র নয়, বরং তা ছিল বৈধ। তার ভাষায়, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শেখ হাসিনা জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন। সেই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রস্তুতি ছিল বৈধ পদক্ষেপ।”
রবিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে তাকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি......
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করা অস্থায়ী সমাধান। তাই দলগতভাবে তাদের বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ট্রাইব্যুনালের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ এসেছে। শেখ হাসিনা জনগণকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে। এটি শুধু ব্যক্তিগত অপরাধ নয়, রাজনৈতিক অপরাধও। তাই জনগণ প্রতিরোধ করে তাকে উৎখাত করেছে।”
বিদেশি ইন্ধনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান......
দেশি-বিদেশি ইন্ধনের অভিযোগ নাকচ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ছিল জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থান। এখানে কোনো বিদেশি শক্তির ভূমিকা নেই। জনগণ জীবন দিয়ে আন্দোলনে সফলতা এনেছে।”
তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা বিচারের ভয় থেকে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
ড. ইউনূস প্রসঙ্গ.........
জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার প্রস্তাবের পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল না। তিনি বলেন, “এটা সত্য নয় যে আন্দোলনের পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্র ছিল। এটা জনগণের অভ্যুত্থান।”
আদালতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য.........
জেরায় শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী আমির হোসেন দাবি করেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, বরং ভারতে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। এ দাবিও প্রত্যাখ্যান করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এটা সত্য নয়। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন এবং জনগণই তাকে উৎখাত করেছে।”
অন্যদিকে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তন রাষ্ট্রের বৈধতা পেয়েছে এবং আপিল বিভাগও তা অনুমোদন দিয়েছে। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, “এখানে সরকারের বৈধতা নয়, বিচার হচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধের।”
মামলার অগ্রগতি.........
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। এর মধ্যে আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
রবিবার ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে নাহিদ ইসলামের জেরা শেষ হয়।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫