বাংলাদেশের ঋণমান কমাল আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি
প্রকাশকালঃ
৩১ জুলাই ২০২৪ ০২:২৬ অপরাহ্ণ ৬৬০ বার পঠিত
দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে, সেই বিবেচনায় বাংলাদেশের ঋণমান আবারও কমানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস বাংলাদেশের ঋণমান বিবি মাইনাস থেকে হ্রাস করে বি প্লাস করেছে।
বিবৃতিতে এসঅ্যান্ডপি বলেছে, এই ঋণমান অবনমনের মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির বহিস্থ খাত ধারাবাহিকভাবে চাপের মুখে আছে। বিশেষ করে তারা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, অর্থনীতিতে স্বল্পমেয়াদি ঝুঁকি থাকলেও দেশের মানুষের মাথাপিছু প্রকৃত প্রবৃদ্ধির হার শক্তিশালী থাকায় বাংলাদেশ সংক্রান্ত পূর্বাভাস স্থিতিশীল রেখেছে এসঅ্যান্ডপি। সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাসের শেষে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১.৭৮ বিলিয়ন ডলার; এই পরিমাণ অর্থ তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেতে পারে।
চলতি জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে সৃষ্ট সহিংসতার রাশ টানতে সরকার যে কারফিউ জারি করে ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছিল, তার প্রভাবে দেশের রিজার্ভ কমবে বলে মনে করছে এসঅ্যান্ডপি। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে।
কারফিউ এখনো চলছে। যদিও তা শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য আবার শুরু হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন এফআইসিসিআইয়ের প্রাথমিক হিসাবে, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের জেরে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ১০ বিলিয়ন বা এক হাজার কোটি ডলার হতে পারে।
ব্লুমবার্গের সংবাদে বলা হয়েছে, ঋণমান কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক ঋণদাতারা বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক অবস্থান নেবে। তারা মনে করছে, সরকার মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি এবং সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি গ্রহণ করায় বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের গতি কমবে। এর ফল পেতে সময় লাগবে; ফলে তার প্রভাব অনুভূত হবে ধীরে।
এদিকে গত মে মাসের শেষ দিকে আট মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান অবনমন করে ফিচ রেটিংস। তখন তারা বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’ করে, যদিও দেশের অর্থনীতি-সম্পর্কিত পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে তারা।
গত প্রায় সোয়া এক বছরে বিশ্বের তিনটি প্রধান ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা যেমন মুডিস, স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস বা এসঅ্যান্ডপি এবং ফিচ বাংলাদেশের ঋণমাণ অবনমন করেছে। অর্থাৎ তারা মনে করছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি দুর্বল হচ্ছে। এতে বৈশ্বিক ঋণদাতাদের কাছে বাংলাদেশের ঋণযোগ্যতা খর্ব হচ্ছে।