ঢাকা প্রেস নিউজ
বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর ১৬ জন উপদেষ্টার নাম ঘোষণা করা হয়, যাদের মধ্যে ১৩ জন গতকালই শপথ নেন। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন দুই তরুণ, আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলাম, যাদের বয়স মাত্র ২৬ বছরের আশপাশে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার বছর না পেরোতেই এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। আন্দোলনের সফলতার পর এবার দায়িত্ব পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে।
আন্দোলন চলাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজপথে বেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন আসিফ। বিভিন্ন সময় ফেসবুক লাইভে এসে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকার কারণে গুম এবং আটকের শিকারও হয়েছিলেন তিনি। তবে হার না মানা মানসিকতা নিয়ে ফিরে এসে আবারও নির্দেশনা দিয়েছেন।
আসিফের সঙ্গে শপথ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সাবেক শিক্ষার্থী মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। আর এর মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন তারা দুজন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম বয়সে আর কেউ কোনো সরকারের উপদেষ্টা হতে পারেননি।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলাম দুজনেরই জন্ম ১৯৯৮ সালে। অর্থাৎ তাদের বয়স ২৬ বছরের আশপাশে। শুধু তাই নয়, এভাবে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কারো অন্তর্বর্তীকালীন কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনেরও নজির নাই।
আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের আকুবপুর গ্রামে। পিতা মো. বিল্লাল হোসেন। মাতা রোকসানা বেগম। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়াশুনা করা আসিফ মাহমুদ কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট ছিলেন।
নাহিদ ইসলামের ডাকনাম ফাহিম। জন্ম ঢাকায়। বাবা শিক্ষক। মা গৃহিনী। তার ছোট এক ভাই রয়েছে। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন নাহিদ।
এই দুই তরুণের অসাধারণ যাত্রা তরুণদের মধ্যে নতুন এক আশার সঞ্চার করেছে। তারা প্রমাণ করেছেন, যদি মন থাকে তাহলে বয়স কোনো বাধা নয়।