কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার দুর্গম পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানা ও ডাকাতদলের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে কক্সবাজার র্যাব-১৫ সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র্যাব-১৫-এর উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন হ্নীলা রঙ্গিখালী এলাকার ফয়সাল উদ্দিন ওরফে ফয়সাল (৪০), টেকনাফ পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়ার মো. বদি আলম ওরফে বদাইয়া (৩৫), একই এলাকার মো. সৈয়দ হোসেন (৩২), পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়ার মো. দেলোয়ার হোসন (৩৫), দক্ষিণ আলীখালীর মো. কবির আহাম্মদ (৪৩) এবং উলুছামারি কুনারপাড়ার মো. মিজানুর রহমান (২৬)।
মেজর সৈয়দ সাদিকুল জানান, ১৮ আগস্ট সন্ধ্যা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫-এর একটি দল টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালী এলাকার গহিন পাহাড়ে অবস্থানরত একটি ডাকাতচক্র ধরার জন্য অভিযান চালায়। তারা সেখানে একটি অস্ত্র তৈরির কারখানা আবিষ্কার করে। র্যাবের অভিযান টের পেয়ে ডাকাতদলের সদস্যরা র্যাবের ওপর গুলি বর্ষণ করে এবং এদিক-ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যেতে থাকে। পালানোর সময় ধাওয়া করে ফয়সাল বাহিনীর মূলহোতা ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল ডাকাতদল চক্রের অন্যান্য সহযোগীর নাম প্রকাশ করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব অভিযান চালিয়ে আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। অস্ত্রের কারখানা থেকে দুটি একনলা বড় বন্দুক, চারটি এলজি, একটি অর্ধনির্মিত এলজি, সাত রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১০ রাউন্ড রাইফেলের তাজা কার্তুজ, একটি ড্রিল মেশিন, একটি আগুন জ্বালানো মেশিন, দুটি লেদ মেশিন, দুটি বাঁটাল, একটি শান দেওয়ার রেত, দুটি লোহার পাইপ, দুটি প্লাস, একটি কুপি বাতি এবং তিনটি স্মার্ট মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়।
মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক আরো জানান, ফয়সাল ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা, হত্যাসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
এ ছাড়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ার সুবাদে সেখানে গড়ে তোলে অস্ত্র তৈরির কারখানা। ফয়সাল বিভিন্ন সময় তাঁর অন্যান্য সহযোগীর মাধ্যমে অন্য সন্ত্রাসীচক্রের কাছে অস্ত্র সরবরাহসহ নিজেদের তৈরি করা আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা তাঁদের অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।