ঢাকা প্রেস নিউজ
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যাতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করতে দ্বিধা বোধ করে, সে জন্য তুলা আমদানির উৎস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ভাবা হচ্ছে। সোমবার পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে 'বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে বাংলাদেশ তুলা চাষের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা জানান। ইআরএফ, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ সুদান কটন জিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "ট্রাম্প সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে শুল্ক দিয়ে রপ্তানি করছে। যদিও বাংলাদেশের ওপর এখনও বাড়তি শুল্ক আরোপ হয়নি, তবে কিছুটা সংশয় রয়ে গেছে।" তিনি আরো বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র তুলা রপ্তানি করতে চায় এবং আমরাও চেষ্টা করছি তাদের সুবিধা দেওয়ার। যদি আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করি এবং সেটি দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করি, তবে তারা আমাদের বিষয়ে বাড়তি শুল্ক আরোপে দ্বিধাবোধ করবে।"
দেশে তুলা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে, তুলাকে দ্রুত কৃষিপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তুলা চাষে ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। তামাক চাষের জমির কিছু অংশে তুলা চাষ করলে কৃষক লাভবান হবেন এবং দেশও অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।" তিনি অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত তুলার ওপর বিদ্যমান ৪ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দ্রুত প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন এবং এই খাতকে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এ ছাড়া, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ মোট চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ তুলা আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, ৫১ শতাংশ আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো থেকে, ১৬ শতাংশ ব্রাজিল থেকে এবং ১২ শতাংশ প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আসে।
তিনি আরও বলেন, "২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে। যদিও ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি না নিয়ে উত্তরণ পেছানোর দাবি জানাচ্ছেন, সরকার পেছানোর সিদ্ধান্ত নেয়নি। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে তিন বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে।" তিনি বিশ্বাস করেন, ব্যবসায়ীরা ওই সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে সক্ষম হবেন। জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিছু শর্ত দিয়েছে, সেগুলো পরিপালন করা হবে বলে তিনি জানান।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক ফকরে আলম ইবনে তাবিব, বাংলাদেশ কটন জিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাবের, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রমুখ।