নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতায় আটকা পড়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলসহ চার শতাধিক বাংলাদেশি।

নেপালে সরকার পতনের পর চার শতাধিক বাংলাদেশি আটকা-জাতীয় ফুটবল দল ও ডিফেন্স কলেজের প্রতিনিধি দলও ঝুঁকিতে.....
নেপালে জেন–জি আন্দোলনের চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশটির সরকার ভেঙে গেছে। এতে সেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চরমে পৌঁছেছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশি জাতীয় ফুটবল দল, মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের প্রতিনিধি দলসহ বহু পর্যটক নেপালে আটকা পড়েছেন। প্রাথমিক হিসাবে প্রায় চার শতাধিক বাংলাদেশি বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে আছেন।
ফ্লাইট স্থগিত, বিমান ফিরল ঢাকায়
রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে অবতরণের অনুমতি না পেয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ১১৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসে। নির্ধারিত সময়ে উড্ডয়ন করলেও প্রায় এক ঘণ্টা আকাশে চক্কর কাটার পর বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে। যাত্রীদের জন্য এয়ারলাইন্স হোটেলের ব্যবস্থা করেছে।
দূতাবাস ও সরকারের সতর্কবার্তা
ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বাইরে না বের হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দুটি হটলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস পর্যটক ও প্রবাসীদের হোটেল বা বাসস্থানে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে নেপাল ভ্রমণ না করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফুটবল দল ও প্রতিনিধি দলের অবস্থা
৩৬ সদস্যের জাতীয় ফুটবল দল এবং ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের ৫১ সদস্য বর্তমানে কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছেন। তাদের সব কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস স্থানীয় সমন্বয়কারীর মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে। তবে দূতাবাস কর্মকর্তাদের চলাফেরায়ও বাধা তৈরি হয়েছে; বিক্ষোভকারীরা একটি উদ্ধারযান ভাঙচুর করেছে বলে জানা গেছে।
নিরাপত্তা ঝুঁকি ও দূতাবাসের অবস্থান
বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশটিতে সরকারের অনুপস্থিতি ও দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মাত্র কয়েকজন পুলিশ দিয়ে দূতাবাস পাহারা দেওয়া হচ্ছে। ফলে নিরাপত্তার জন্য ফোনে পরামর্শ দেওয়াই তাদের একমাত্র ভরসা।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নেপালের সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহতদের পরিবারদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বাস করে নেপালের জনগণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।
ফুটবল দলকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলকে নিরাপদে দেশে ফেরাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সরাসরি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও টিম ম্যানেজারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে তাদের দ্রুত দেশে ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫