মোহাম্মদ করিম, বিশেষ প্রতিনিধি:-
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছায়াঘেরা গ্রাম নাইখাইনের এক সংগ্রামী মা চেমন আরা বেগম (৭৮)। ১১ সন্তানের এই মা নিজের আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিয়ে গড়েছেন এক একটি সোনার মানুষ—চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা—সবার মধ্যেই ছড়িয়ে দিয়েছেন আলোর স্পর্শ।
চেমন আরা বেগমের প্রথম সন্তান মোহাম্মদ শহীদ উদ্দিন ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক। দ্বিতীয় ছেলে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সাতকানিয়ার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
তৃতীয় সন্তান মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন বর্তমানে লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ।
চতুর্থ সন্তান পারভীন আকতার স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে নারী উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
পঞ্চম সন্তান মোহাম্মদ আলমগীর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি সংস্থায় প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার (পরিবেশ ও বন)।
ষষ্ঠ সন্তান সেলিনা আকতার বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।
সপ্তম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন পেশায় শিশুরোগবিশেষজ্ঞ।
অষ্টম সন্তান অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ পটিয়া সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
নবম সন্তান আবু সাদাৎ মুহাম্মদ সায়েম চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের প্রধান।
দশম সন্তান রেজিনা আকতার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন স্কুল ও কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।
সবচেয়ে ছোট ছেলে মোহাম্মদ ওমর কাইয়ুম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন আইইডিসিআর-এ সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার এবং রেসিডেন্ট অ্যাডভাইজার পদে কর্মরত।
চেমন আরার স্বামী আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালটির কর সংগ্রাহক ছিলেন। স্বামীর সীমিত আয়ে এত বড় পরিবার চালানো সহজ ছিল না। তবুও সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে কোনো দিন পিছপা হননি এই মা।
এমন আত্মত্যাগ আর মমতার স্বীকৃতি স্বরূপ চেমন আরা বেগম পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘অদম্য নারী’ পুরস্কার।
এ যেন শুধু একজন মায়ের নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্যই এক অনুপ্রেরণার গল্প।