রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয় না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয় না। সমস্যার মূল উৎস হলো মানসিকতা ও রাজনৈতিক আচরণ। তিনি বলেন, পাকিস্তান তৈরির পেছনে প্রধান ভূমিকা ছিল মুসলিম লীগের, কিন্তু আজ তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। জাসদ ও ইউপিপির মতো দলগুলোও সময়ের পরিক্রমায় ভেঙে পড়েছে কিংবা বিলীন হয়ে গেছে। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া রাজনৈতিক শক্তিগুলো স্বাভাবিকভাবেই ধ্বংস হয়ে যায়।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই সমাবেশের মূল দাবি ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনে প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “জনগণই ঠিক করবে কোন দল গ্রহণযোগ্য এবং কোন দল অগ্রহণযোগ্য। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণই প্রকৃত রায় দেবে। আজ যারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চায়, ভবিষ্যতে তারাই হয়তো বিএনপিকেও নিষিদ্ধ করতে চাইবে। কিন্তু জনগণ যদি মনে করে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও দেশের ক্ষতির কারণ, তাহলে তারাই এই দলকে প্রত্যাখ্যান করবে।”
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন এখনো বাতিল অবস্থায় থাকলেও সরকার তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে। তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি কেন উঠছে? এর পেছনে কোনো গোপন শক্তির ইঙ্গিত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, “একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি দেশ ত্যাগ করলেন অথচ কোনো সংস্থা জানে না—এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আসলে এখন দেশে একাধিক সরকার চলছে—কেউ বলছেন ইউনূস সরকার, কেউ বলছেন ছাত্রদের সরকার।”
আরাকান ইস্যুতে সরকারের নীরবতা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। গয়েশ্বর বলেন, “জনগণ আরাকান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সরকার এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।”
তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার যদি বলে তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই, তাহলে সেটা জাতিকে জানাতে হবে। নিরাপত্তা এখানে মূল বাধা নয়, আসল কারণ সরকার জানে। দেশের জনগণ জানতে চায়, কী সেই বাধা যে কারণে তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন এলডিপির চেয়ারম্যান ড. শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আব্দুল করিম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম.এ. মান্নান, পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মুহাম্মদ লিটন, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, জমিয়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব ইমরুল কায়েস ও কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫