|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৬ জুন ২০২৫ ০১:৪০ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৫ জুন ২০২৫ ০৪:৪৫ অপরাহ্ণ

অর্থাভাবে রুদ্ধ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া মাজারুলের ভর্তি 


অর্থাভাবে রুদ্ধ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া মাজারুলের ভর্তি 


আলমগীর হোসেন,নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:-

 

শত প্রতিকূলতা ও অভাব-অনটনের মাঝেও হার না মানা এক তরুণ মাজারুল ইসলাম। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পশ্চিম আঠারো পাইকা গ্রামের ছেলে মাজারুল। বাবার নাম শাহাবুদ্দীন, মা লাইলী বেগম। কৃষিপণ্য হিসেবে কুলা, ডালি বিক্রি করে একসময় পুরো পরিবারের খরচ চালাতেন বাবা, কিন্তু বয়স ও রোগ-শোকের কারণে এখন আর আগের মতো উপার্জন করতে পারেন না।
 

তিন ভাই-বোনের মধ্যে মাজারুল সর্বকনিষ্ঠ। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাবা-মায়ের সাহায্যে পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও নবম শ্রেণিতে উঠার পর পরিবারের অবস্থা আরও খারাপ হয়। মা অসুস্থ হয়ে পড়েন, বাবার আয়ে টান পড়ে। তখন থেকেই নিজেই টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে শুরু করেন মাজারুল।
 

এসএসসি পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে কুড়িগ্রাম শহরের কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হন। দিনে টিউশনি, রাতে পড়াশোনা — এভাবেই নিজের উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনার খরচ নিজে বহন করেছেন।
 

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতির সময় কোচিং করার ইচ্ছা থাকলেও অর্থাভাবে তা সম্ভব হয়নি। বর্ণ এডমিশন কেয়ারে ৫০% বৃত্তি পেলেও বাকি ৫০% ম্যানেজ করতে না পারায় সেখানে ভর্তি হতে পারেননি। ঘরে বসেই পুরনো বই, নিজের সঞ্চিত অল্প কিছু টাকা ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তিকে সম্বল করে শুরু করেন ভর্তি প্রস্তুতি।
 

তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় মেরিট পজিশনে তার অবস্থান ২৯১৩তম। প্রথম মেরিটে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান। অথচ আজ সেই মেধাবী ছেলেটিই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
 

তার পরিবারের আয় নেই বললেই চলে। মা অসুস্থ, বাবা আর আগের মতো উপার্জন করতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের পক্ষ থেকে ভর্তি ফি ও মাসিক থাকা-খাওয়ার খরচ চালানো একেবারেই অসম্ভব। পরিবারের কথামতো এখন ঢাকায় গিয়ে কিছুদিন কাজ করে টাকা জোগাড় করে ভর্তি হওয়ার চিন্তায় আছেন মাজারুল।
 

তার কণ্ঠে বিষাদের ছোঁয়া, "বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও যদি ভর্তি হতে না পারি, তাহলে কষ্ট করে গড়া সব স্বপ্নই ভেঙে যাবে। এভাবেই হয়তো আমাদের মতো অনেকেই টাকার কাছে হেরে যায়।" এই কঠিন সময়ে সমাজের হৃদয়বান মানুষের কাছে মাজারুলের আবেদন — কেউ যেন তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেন। তার এই স্বপ্নকে তিনি বাঁচিয়ে রাখতে চান। 
 

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ নাম্বার ০১৩২৮৫৮৬৭২৭।
 


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫