নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে যমুনায় বিএনপি প্রতিনিধি দল

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৫ অপরাহ্ণ   |   ৮৬ বার পঠিত
নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে যমুনায় বিএনপি প্রতিনিধি দল

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-

 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে স্পষ্ট রোডম্যাপ জানতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন 'যমুনা'-য় বৈঠকে অংশ নিয়েছে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
 

বুধবার দুপুর ১২টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটি যমুনায় পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
 

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে দলের পরবর্তী করণীয়। নির্বাচনের সময়সূচি এবং রোডম্যাপ নিয়ে যদি সুস্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়, তবে দল নির্বাচনী প্রস্তুতিতে মনোযোগ দেবে। অন্যথায় রাজনৈতিক কর্মসূচির দিকে ঝুঁকবে।
 

এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, “নির্বাচন নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। আমরা সবসময়ই সংলাপ ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার পক্ষে।”
 

সূত্র জানায়, আগের বৈঠকগুলোতে নির্বাচন নিয়ে আশাব্যঞ্জক আলোচনা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আসা বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে ধোঁয়াশা আরও ঘনীভূত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আগের বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের কথা বললেও, তার কোনো আনুষ্ঠানিক রূপ আজও দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে আবারও দীর্ঘ মেয়াদি সরকারের পক্ষে প্রচারণা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
 

স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে গিয়ে বারবার উল্টো পথে যাওয়া উচিত নয়। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবিকে পাশ কাটিয়ে দীর্ঘ মেয়াদের কথা বলা দেশের গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।”
 

তিনি আরও বলেন, “যে গণতন্ত্রের জন্য এত মানুষ রক্ত দিয়েছে, সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আপত্তি কোথায়? কেন নির্বাচনের সময় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে—এসব বিষয় বৈঠকে তুলে ধরা হবে।”
 

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, নির্বাচন ও সংস্কার একসঙ্গে করা সম্ভব। তারা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে করা সম্ভব, আর সংবিধান সংশোধনের বিষয়গুলো নির্বাচনের পর নতুন সংসদে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। তাই নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
 

এই প্রেক্ষাপটে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করতে কাজ করছে বিএনপি। আজকের বৈঠকে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি না এলে দল পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন কর্মসূচির দিকেই এগোবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শও শুরু হয়েছে।
 

এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “একজন উপদেষ্টা বলছেন ডিসেম্বর, আরেকজন বলছেন জুন, কেউ আবার পাঁচ বছরের কথা বলছেন। এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।” তিনি যোগ করেন, “এই বিভ্রান্তি দূর করতেই আমরা যমুনায় এসেছি। আলোচনার পরই আমরা পরবর্তী অবস্থান জানাব।”


কাল ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক
 

বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৩ মার্চ সংস্কার কমিশনে মতামত জমা দেওয়ার পর এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।
 

এর আগে, ঐকমত্য কমিশন ৬ মার্চ পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে একটি 'স্প্রেডশিট' পাঠায়।