শিবগঞ্জে বিনামূল্যে বই ও রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে আনন্দ পাই বই প্রেমিক নাহিদ 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৭ জুলাই ২০২৫ ০৩:৩৩ অপরাহ্ণ   |   ৩৬ বার পঠিত
শিবগঞ্জে বিনামূল্যে বই ও রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে আনন্দ পাই বই প্রেমিক নাহিদ 

মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-


 

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিবগঞ্জ উপজেলার এক তরুণ ব্যক্তি গাছ ও বই যার সফর সঙ্গী সেই নাহিদ উজ্জামান পরিচিত হয়েছেন বই ও রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে বই প্রেমিক হিসেবে।শিক্ষার্থী হয়েও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ কর্মের অর্থা দিয়ে তৈরী শান্তি নিবিড় পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ধরে পড়া শিক্ষার্থী ও পরিবেশ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করাই তার লক্ষ্য। আর এই পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ নিয়ে কাজ করেন শিবগঞ্জ উপজেলা তরুণ ব্যক্তি নাহিদ উজ্জামান।


২০১৪ সালের দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় এক্সিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই পাখি, গাছ, বই প্রতি ভালোবাসা হয় এগুলোর প্রতি ভালোবাসা তার একটি নেশা হয়ে দাঁড়ায় তারপর থেকে ব্যক্তি গত ভাবে স্বেচ্ছাসেবী কাজের সাথে জড়িয়ে পড়েন রাস্তার ধারে গাছ লাগা , বিনামূল্যে রচনা,গাইড ও গল্পের বই প্রদান, অসহায় পরিবার গুলোকে নগদ অর্থ প্রদান করা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা, পানির কলের ব্যবস্থা, জটিল ও কঠিন রোগে সহযোগিতা প্রদান করে আসছেন। তার এই কাজে সাধুবাদ জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠন থেকে সম্মাননা স্মারক ও গুণীজন সংবর্ধনা পেয়েছেন। স্বেচ্ছায় মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতা প্রদান করা এটা অত্যন্ত ভালো লাগে ২০১৬ সালের পর থেকে নিজের পড়া গাইড অন্যদেরকেও পড়ার সুযোগ দিয়ে ছিলেন সেগুলো আর ফেরত নেওয়া হয় নি সেই থেকে শুরু হলো একটি দুইটি করে বই কেনা পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর থেকে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ দিয়ে পাঠাগার আকারে গড়ে তুলেন। এই পাঠাগার থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা কে বিনামূল্যে বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন ।  ২২ বছর বয়সি নাহিদ উজ্জামান নিজে এককভাবে প্রথম থেকে পরিচালনা করে আসছেন শান্তি নিবিড় পাঠাগার । বই কেনার অর্থ জমাই ছোট্ট  মুরগির বাচ্চা কিনে  বড় করে , কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করে, দেওয়ার পরে এই টাকা দিয়ে পাঠাগার জন্য ওয়ান থেকে অনার্স ডিগ্রী গাইড,রাস্তার ধারে গাছ ,জটিল কঠিন রোগে সহযোগিতা প্রদান  করা হয় । এই পাঠাগার নিয়ে অনেক স্বপ্ন আছে জীবনে কষ্ট হলেও এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চান ও রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে সব স্বপ্ন পূরণ করতে চান। যতদিন বেঁচে থাকবেন এই শিবগঞ্জ সহ সারা বাংলাদেশে মানুষকে ভালোবাসা দিয়ে যেতে চান কিন্তু তার বিনিময়ে কারো কাছে কোন জিনিস পেতে চাই না।পাঠাগার টিতে বর্তমানে  ৫ হাজার ৬৪৩ বইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গাইড বই দিয়ে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন। যারা বাইরের জেলা ও উপজেলার আছেন পাঠক তারাকে কুরিয়ারের মাধ্যমে গাইড পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তথ্য মতে জানতে পারি এই পাঠাগার জন্য নিজে কষ্ট পরিশ্রম করে বই কেনাটাই তার অভ্যাস মানুষের মাঝে বইয়ের মাধ্যমে শিক্ষা আলো বিলিয়ে দিচ্ছেন প্রতিটা ঘরে ঘরে সুশিক্ষিত ব্যক্তি গড়ে উঠুক এটাই তার চাওয়া।


এই পাঠাগারে স্কুল কলেজের পড়া ছাত্রদের ও বয়স্ক ব্যক্তিদের কোরআন শিক্ষা  দেওয়া হয়।২০১৪ সালের পর থেকে তার স্বপ্ন ছিল অসহায়,দুঃস্থ ও এতিমদের লেখাপড়ার জন্য বই,খাতা কলম কিনে দেওয়া এবং শিক্ষক  দিয়ে প্রথম থেকে নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ফ্রি তে প্রাইভেটও পড়ান ছাত্রদের কোন পয়সা নেওয়া হয় না ।  ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত  বিভিন্ন  শ্রেণীর প্রায় অনেক জন অসহায়  ও দুংঃস্থ শিক্ষার্থীদের মাঝে ৬০ সেট গাইড বই বিতারন করা হয় সেগুলো আর ফেরত নেওয়া হয়নি , মসজিদ মাদ্রাসা সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার কাজে কোরআন উপহার প্রদান করা হয়।স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠানে সহ রাস্তার ধারে গাছ লাগানো, কোরআন শরীফ প্রতি রমজানে ব্যক্তিগত ভাবে বিতারণ করা হয় ,এইচএসসি এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা হলে পাঠাগারের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই উপহার প্রদান করা হয়, অসহায় ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে ২০১৫ সালের পর থেকে  প্রতি বছর দুই ঈদে ঈদ সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়ে। কারো কষ্টের কথা শুনলে ছুটে যাওয়া তার একটি অভ্যাস। । তাছাড়া হাইস্কুল ও কলেজ পর্যায়ের প্রতিবছরের মত এই বছরেও ২০২৫ সালের নতুন কারিকুলাম এর নতুন গাইড বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় মানুষ পড়ালেখা করছে ন। এভাবেই চক্রাকারে বই বিতরণের মাধ্যমে প্রাইমারী থেকে কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হয় । । এখানেই শেষ নয় নাহিদ উজ্জামানের  শিক্ষাসেবা মূলক কাজের অওয়াতায় আরো রয়েছে, বিভিন্ন বড় বড় মনীষীদের জীবনী,কবি সাহিত্যিকদের লেখা কবিতা সামগ্রী ও উপন্যাস,ধর্মীয় বই, কোরান, হাদিস, অন্য ধর্মের ধর্ম গ্রন্থ সহ নানা ধরনের  সহ বই রয়েছে পাঠাগারে। নাহিদ উজ্জামান বলেন রাস্তার ধারে গাছ লাগা ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের কে বিনামূল্যে নতুন গাইড পড়ার সুযোগ করে দিতে পেরে আমি যতটা মনে শান্তি পায় মনে সেটি বলার মত নয় আলহামদুলিল্লাহ এগুলো কে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।


প্রতিদিন বিকাল চার টা হতে রাত আটটা পর্যন্ত বেকার যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনকে শিক্ষা দিয়ে থাকি পাঠাগারে এবং বেতনভুক্ত শিক্ষক দিয়ে ফ্রি কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। একটি দুইটি করে নিজের জমানো টাকা দিয়ে অনেক অসহায় পরিবারগুলোকে বই খাতা এবং আর্থিক সহযোগিতা করেছি এখন ও চলমান আছে তার পরে ২০২০ দিকে প্রতিষ্ঠিত করা হয় শান্তি নিবিড় পাঠাগার মা, বাবা কে যতটা ভালবাসি সেইরকম বই খাতা, পশুপাখি, কবুতর, গাছপালার প্রকৃতির সৌন্দর্যকে  ভালোবাসি আমার এই সব কাজ দেখে অনেকে পাগল বলে আখ্যা দেয় এতে আমার কোন দুঃখ নেই। মুরগি, কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করে বই , গাছ , কেনা আমার নেশা। অসহায় ও দু:স্থদের পাশে থেকে তাদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানোর ব্যবস্থা করতে পেরে আমি গর্বিত আলহামদুলিল্লাহ ।