আর দিতে হবে নাসঞ্চ য়পত্রের মুনাফায় বাড়তি কর, এনবিআর প্রজ্ঞাপন জারি

সঞ্চয়পত্রের বাইরে রপ্তানিতে নগদ ভর্তুকি থেকে প্রাপ্ত অর্থ রপ্তানিকারকের আয় হিসেবে আর অন্তর্ভুক্ত হবে না। এ নিয়ে এনবিআরের নতুন নির্দেশনা।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে বাড়তি আর কোনো কর আদায় করা হবে না। এটির মুনাফা থেকে উৎসে যে কর কেটে রাখা হবে, সেটিই চূড়ান্ত কর–দায় হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তাতে সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে করদাতার আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
গত জুনে পাস হওয়া নতুন আয়কর আইনে সঞ্চয়পত্রের মুনাফাকে করদাতার আয় হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হয়। এতে ক্ষেত্রবিশেষে করদাতাদের ওপর বাড়তি করের চাপ তৈরির আশঙ্কা দেখা দেয়। নতুন আইনের এ বিধান যুক্ত করার কারণে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভরশীল করদাতারা হতাশ হন। সে জন্য এনবিআর বিধানটি বাতিলের উদ্যোগ নেয়।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে উৎসে যে কর কাটা হতো, সেটিই করদাতার চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচিত হতো। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা করদাতার আয় হিসেবে যুক্ত হতো না। এখন নতুন প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আগের সেই অবস্থাতেই ফিরে গেল এনবিআর।
ধরা যাক, কোনো করদাতার বার্ষিক আয় ১০ লাখ টাকা। ওই করদাতা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে বছরে মুনাফা পান ২ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্রের ওই মুনাফা থেকে ২০ হাজার টাকা উৎসে কর কেটে রাখা হয়। নতুন আয়কর আইনের বিধান কার্যকর হলে সে ক্ষেত্রে করদাতার ১০ লাখ টাকা আয়ের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের ২ লাখ টাকা মুনাফাও আয় হিসেবে যুক্ত হতো। এরপর ওই করদাতার যে কর নির্ধারিত হতো, তা থেকে ২০ হাজার টাকা উৎসে কর বাদ দিয়ে বাকি কর পরিশোধ করতে হতো। এখন বিধানটি বাদ দেওয়ায় সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত ২ লাখ টাকা মুনাফা আর আয় হিসেবে যুক্ত হবে না। এ ক্ষেত্রে উৎসে কর হিসেবে কেটে নেওয়া ২০ হাজার টাকাই চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ ছাড়া নতুন আইনে রপ্তানি খাতে সরকারের দেওয়া নগদ সহায়তা বাবদ প্রাপ্ত অর্থকেও রপ্তানিকারকের আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। গতকাল নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে সেখানেও সংশোধন এনেছে এনবিআর। এর ফলে এখন থেকে নগদ ভর্তুকি থেকে প্রাপ্ত অর্থ রপ্তানিকারকের আয় হিসেবে আর বিবেচিত হবে না। নগদ ভর্তুকির বিপরীতে যে উৎসে কর কাটা হবে, সেটিই চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য হবে।
এর বাইরে যেসব করদাতার জন্য রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যাংকের সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদ বা মুনাফা থেকে যে উৎসে কর কাটা হবে, সেটিও চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচিত হবে। নতুন প্রজ্ঞাপনে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত করদাতাদের। এ তালিকায় আছেন বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা প্রভৃতি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, করদাতাদের অসুবিধার কথাটি বিবেচনায় নিয়ে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫