|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১১:১৮ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৩৬ অপরাহ্ণ

নতুন রাজনৈতিক দলে থাকছেন না ঢাবি শিবিরের সাবেক দুই সভাপতি


নতুন রাজনৈতিক দলে থাকছেন না ঢাবি শিবিরের সাবেক দুই সভাপতি


ঢাকা প্রেস নিউজ

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলে থাকছেন না ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ ও রাফে সালমান রিফাত।
 

ফেসবুকে দেওয়া পৃথক পোস্টে তাঁরা বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। জুনায়েদ জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রিফাত যুগ্ম সদস্য সচিব ছিলেন।
 

আগামী শুক্রবার জানাকের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া দলটির আহ্বায়ক হতে যাচ্ছেন সাবেক সরকারি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব হচ্ছেন আখতার হোসেন।
 

গত ১ জুলাই, শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে প্ল্যাটফর্ম গড়ে আন্দোলনে নামেন। শেখ হাসিনা সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষও তাঁদের সঙ্গে রাজপথে নামলে আন্দোলন রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে।
 

এই অভ্যুত্থানে ছাত্রশক্তির নেতারা সামনের সারিতে থাকলেও শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারাও যুক্ত ছিলেন। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে ৮ সেপ্টেম্বর জানাক প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন মতাদর্শের সাবেক নেতারা অন্তর্ভুক্ত হন। ছাত্রশক্তি, ছাত্রশিবির, অধিকার পরিষদ এবং কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ছাত্রসংগঠন ও বাম সংগঠনের নেতারা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের জন্য প্রতিযোগিতায় নামেন।
 

নতুন দলে নেতৃত্ব নির্ধারণ নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে ছাত্রশক্তি ও শিবিরের সাবেক নেতাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সামাজিক মাধ্যমে পরস্পরকে উদ্দেশ করে লেখা পোস্টে এই বিরোধ প্রকাশ পায়। অনেকে অভিযোগ করেন, অতীতে শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে নতুন দলে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের মতে, এটি আওয়ামী লীগ আমলের শিবির ট্যাগ দিয়ে নিপীড়নের মতোই একটি আচরণ।
 

জানাক সূত্রে জানা যায়, বিরোধ মেটাতে আলী আহসান জুনায়েদকে নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক করার আলোচনা চলছিল।
 

গত সোমবার জুনায়েদ ও রাফে চীন সফরে যান। তাঁরা অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতা হিসেবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে যান। তবে, জানাকের আপত্তির ফলে দুই পক্ষের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়। সোমবার মধ্যরাতে জানাক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জুনায়েদ ও রিফাতের সফরের সঙ্গে সংগঠনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
 

জানাকে থাকা সাবেক শিবির নেতারা জানান, এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাঁদের অপমান করা হয়েছে, যা সমঝোতার সম্ভাবনা শেষ করে দিয়েছে। যদিও নাহিদ ইসলাম জুনায়েদসহ শিবিরের সাবেক নেতাদের ধরে রাখার চেষ্টা করছিলেন।
 

এরপর, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আলী আহসান জুনায়েদ ফেসবুকে লেখেন, "আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি তরুণদের নেতৃত্বে যে নতুন রাজনৈতিক দলটি গঠিত হচ্ছে, সেখানে আমি থাকছি না। এটি আমি আরও সপ্তাহখানেক আগেই দলের নেতাদের জানিয়েছি। বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে ও নতুন দলের ওপর জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে নীরব ছিলাম। কিন্তু চারপাশের গুঞ্জন থামছে না, তাই স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলাম।"
 

তিনি আরও লেখেন, "দুঃখজনক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েও আমি আশা করি, নতুন দলটি ট্যাগিং ও ট্যাবুর রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে নতুন ধারার রাজনীতি গড়ে তুলবে। অভ্যুত্থানের সময় আমাদের মধ্যে যে ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও সহযোগিতা ছিল, তা যেন ভবিষ্যতেও অটুট থাকে। নতুন দল, নাহিদ ইসলাম ও নব নেতৃত্বের জন্য শুভকামনা রইল।"
 

আজ বুধবার ভোরে জুনায়েদের পোস্টটি শেয়ার করে রাফে সালমান লিখেছেন, "২৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলে আমিও থাকছি না। তবে আমার রাজনৈতিক পথচলা এখানেই শেষ নয়। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক সম্ভাবনার যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে স্বল্প মেয়াদে বড় কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা না থাকলেও রাজনীতি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আমাদের ধৈর্য ধরে দীর্ঘ পথচলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।"


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫