রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পেছনে সীমান্তে দুর্নীতি দায়ী: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশকালঃ ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৪৮ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পেছনে সীমান্তে দুর্নীতি দায়ী: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা প্রেস নিউজ
 

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দুর্নীতির কারণে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
 

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সীমান্তে দুর্নীতির কারণে স্থল ও জলপথসহ বিভিন্ন রুট দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ রোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
 

‘গত দুই মাসে বাংলাদেশে নতুন করে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে’—এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মো. তৌহিদ হোসেন জানান, নীতিগতভাবে আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে না দেওয়ার অবস্থান থাকলেও বাস্তব পরিস্থিতির কারণে তা রোধ করা সম্ভব হয়নি। ফলে, সরকার ৬০ হাজার রোহিঙ্গার প্রবেশে বাধা দিতে পারেনি। তবে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি; তারা বিভিন্ন পথে প্রবেশ করেছে।
 

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে দুর্নীতি অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা। এই দুর্নীতির ফলে প্রচুর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে, এবং এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও আরেকটি রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা রয়েছে, তবে আমি মনে করি না এমন আরেকটি বড় ঢল আসবে। তা সত্ত্বেও, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
 

মো. তৌহিদ হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী ৫ বছরে যারা তরুণ রোহিঙ্গা হিসেবে বড় হবে, তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। তখন সমস্যাটি শুধু বাংলাদেশের নয়, সবার জন্যই গুরুতর হবে। ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গারা নৌকায় চড়ে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত পৌঁছেছে।
 

সাম্প্রতিক ব্যাংকক সফর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, তিনি মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়েকে বলেছেন যে, মিয়ানমার সীমান্ত এখন আর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই, এবং এটি রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তির অধীনে চলে গেছে। মিয়ানমারকে এখন এমন একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে যাতে সীমান্ত সমস্যা এবং রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হয়।
 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, চীন ইতোমধ্যে মিয়ানমার সীমান্তের অনেক স্ক্যাম সেন্টার ধ্বংস করেছে, তবে থাইল্যান্ড ও লাওস সীমান্তে এই ধরনের সেন্টারগুলো সক্রিয় রয়েছে, যেখানে অনেক বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। অনেকেই পাচারের শিকার হলেও কিছু মানুষ লোভের বশে সেখানে গেছেন।
 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ব্যাংককে ছয় দেশের অংশগ্রহণে একটি অনানুষ্ঠানিক পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে এবং থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসারও উপস্থিত ছিলেন।