সংযোগ সড়কের কাজ অসমাপ্ত রেখেই উদ্বোধন হচ্ছে মাওলানা ভাসানী তিস্তা সেতু

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
তিন দফা উদ্বোধনের তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে চিলমারীর অংশে সংযোগ সড়কের কাজ অসমাপ্ত রেখেই উদ্বোধন হচ্ছে হরিপুর-চিলমারী ১,৪৯০ মিটার দীর্ঘ মাওলানা ভাসানী তিস্তা সেতুর। আগামীকাল সেতুর উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এ লক্ষে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলেও সেতুর সংযোগ সড়ক চিলমারী অংশের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। ফলে সেতুর উদ্বোধন হলেও তাৎক্ষণিক সুফল ভোগ করতে পারছেন না চিলমারী অঞ্চলের মানুষ।
জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার থেকে চিলমারী উপজেলা হেডকোয়ার্টার সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১,৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প (৩য় সংশোধিত) এর আওতায় সড়ক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন শুরু হয়। এ লক্ষ্যে চিলমারী উপজেলা হেডকোয়ার্টার মাটিকাটা মোড় হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইনঃ ১,২২০ মি.-৫,২৩০ মি.) উন্নয়ন এবং চিলমারী উপজেলা হেডকোয়ার্টার হতে পাঁচপীর জিসি সড়ক (চেইনঃ ০০ মি.-১,২২০ মি.) মিলে মোট ৫,২৩০ মি. এলাকা উন্নয়নের ঠিকাদারি চুক্তি সম্পাদিত হয় ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখে। যার চুক্তি মূল্য ছিল ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ ২ হাজার ৮৩২ টাকা।
কাজ নেয়ার সময় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অতিমাত্রায় নিম্নদর দাখিল করে নাটোর এলাকার মীর হাবিবুল আলমের নামের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজটি বাগিয়ে নেন সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের এপিএস রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। যেটি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে শুরু হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে শেষ হওয়ার কথা ছিল। যথাসময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত করা হয়।
সেতু উদ্বোধনের দুই দিন আগে অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত চিলমারী অংশের ৫,২৩০ মিটারের মধ্যে মাত্র ২,১৫০ মিটার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। একদিন বাদেই বুধবার সেতু উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সরেজমিনে চিলমারী হেডকোয়ার্টার হতে দুই থানার মোড় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা মাটিকাটা মোড় থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত পিসিং এর কাজ করা হয়েছে। কলেজ মোড় থেকে মুদাফতথানা সরকারপাড়া পর্যন্ত পুরাতন রাস্তার পিস উল্টে দিয়ে রাখা হয়েছে, যা যানবাহন চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী। সরকারপাড়া মোড় থেকে অপু হাজির ভাটা পর্যন্ত রাস্তা পাকা করা হলেও পরবর্তী অংশে কাজ এখনো শেষ হয়নি।
আশরাফ আলী, মাজেদুল ইসলাম, শাহিন মাহমুদসহ অনেকে বলেন, “সেতুটি মানুষ চলাচলের জন্যই নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ চিলমারী অংশের রাস্তার কাজ না হতেই সেতুর উদ্বোধন—বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. জুলফিকার আলী জানান, “সেতুটি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে উদ্বোধন করা হবে; সেতুর সাথে সংযোগ সড়কের কোন সম্পর্ক নেই। চিলমারী অংশের ৫,২৩০ মিটার রাস্তার মধ্যে ২,১৫০ মিটার রাস্তার কার্পেটিং শেষ হয়েছে। বাকি ২,৬৫০ মিটার রাস্তা কার্পেটিংয়ের জন্য প্রস্তত রয়েছে এবং ৭০০ মিটার রাস্তার দুটি স্থানে জমির সমস্যা রয়েছে। সমস্যা সমাধান হলে বাকি রাস্তার কাজ করা হবে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫