বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেবিদ্বারে রুবেল হত্যাকারীদের বাঁচাতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পরিবারের

ঢাকা প্রেস
আবুল কালাম আজাদ ভূঁইয়া, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলকালে গত ৪ আগস্ট কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর সদরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রাজ্জাক রুবেল (৩৩) এর হত্যাকারীদের বাঁচাতে বিএনপির একটি পক্ষ গভীর ভাবে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের মা ও মামলার বাদী হাসনেআরা বেগম। শনিবার বিকালে পৌর এলাকার নিজ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে রুবেলের মা বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সারা দেশে হাজার হাজার মায়ের বুক খলি হয়েছে। তেমনি আমিও হরিয়েছি আমার একমাত্র ছেলে, আমার বুকের মানিক রুবেলকে। সেই ছিলো আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যাক্তি। তার মৃত্যুতে আমরা আজ অসহায় ও দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমি একজন বিধবা মা, আমার ছেলের বউ ৯ মাসের অন্তসত্ত্বা সেও এখন বিধবা। রুবেলের সন্তানেরা হয়েছে বাবা হারা এতিম। সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটবে তা আমাদের জানা নেই।
এদিকে বিএনপি নেতা তারেক মুন্সীর নেতৃত্বে বিএনপি’র একটি পক্ষ তারেক মুন্সীর আপন ভাতিজা আওয়ামীলীগের সাবেক দুই বারের এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও তার একান্ত ক্যাডার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ আরো কয়েকজন হত্যাকারীদের বাঁচাতে এই তারেক মুন্সী আমার পায়ে ধরে এবং বড় অংকের টাকার অফার দেয়। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, আমার সন্তানকে কারা গুলি করে হত্যা করেছে, তার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী হিসেবে দেবিদ্বারবাসী জানেন। সুতরাং খুনিদের বিরুদ্ধে আমরা পারিবারিকভাবে মামলা করবো এটাই স্বাভাবিক। তারেক মুন্সী মুল আসামীদের আড়াল করতে তাহার অনুসারী আবুল কাশেম, পিতা রেনু মিয়া নামের একজনকে বাদী করে আমার ছেলে চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। শুধু তাই নয়, যাতে আমি মামলা করতে না পারি সে জন্য তারা বিভিন্নভাবে হুমকী, ভয় ও প্রতিবন্ধকতা তৈরির অপচেষ্টা করেছে। এই কাশেম আমাদের পারিবারের কেউ না, তাকে আমরা চিনিও না। আমরা এই ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, আমার ছেলে শহীদ রুবেল পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য হিসেবে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিল। আমার প্রশ্ন হলো তারেক মুন্সী একজন বিএনপি নেতা হয়ে তার দলীয় ভাইকে হত্যাকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের বাঁচাতে কেন চেষ্টা করছেন তা আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে তারেক রহমানসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে চাই।
তবে আল্লাহর রহমতে অনেক নাটকীয়তার পর আমার দায়েরকৃত হত্যা মামলাটি দেবিদ্বার থানায় রুজু হয়েছে, যার মামলা নাম্বার ১৪৭/২৪। এখন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট উপদেষ্টাসহ দেশবাসীর কাছে আমার একটাই দাবী যেন আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের সকলের ফাঁসি নিশ্চিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নিহত রুবেলের মা হাসনেআরা বেগম, চাচা মোঃ আবু তাহের, ইউনুছ মিয়া ও স্ত্রী হেপী আক্তার ও ফুফাতো ভাই রবিউল হাসান । উল্লেখ্য-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলকালে গত ৪ আগস্ট কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর সদরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গুলি চালায় আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার উপর। সে সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে পৌর সেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রাজ্জাক রুবেল গুরত্বর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আবুল কাশেম নামের স্থানীয় এক বিএনপি নেতা নিহত রুবেলের চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে কুমিল্লার আদালতে মামলা করেন। অপরদিকে একই দিন সন্ধ্যায় রুবেলের মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি রাজি মোহাম্মদ ফখরুল ও আবুল কালাম আজাদ এমপি সহ আরো ২৭০ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫