|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০৬ মার্চ ২০২৫ ১০:০৬ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৬ মার্চ ২০২৫ ০৩:০৫ অপরাহ্ণ

গুলশানে বাসায় মবের হানা, স্বর্ণালংকার লুট


গুলশানে বাসায় মবের হানা, স্বর্ণালংকার লুট


ঢাকা প্রেস নিউজ

 

রাজধানী গুলশানের একটি বাসায় মঙ্গলবার রাতে একদল বিশৃঙ্খল জনতা (মব) হানা দেয়। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয়তাবাদী চালক দলের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খন্দকার (৪৮)। এই ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের কাছ থেকে তিনটি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে।
 

অভিযুক্তরা দাবি করছেন যে, এই বাসাটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের। তারা জানান, তানভীর সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তাদের অভিযোগ ছিল যে, ওই বাসায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তাই তারা বাসায় হানা দেন।
 

স্থানীয়রা জানান, গুলশান ২-এর ৮১ নম্বর সড়কের ৮/আই কনকর্ড কটেজের চারতলার ফ্ল্যাটটি প্রয়াত রহমান শরীফের মালিকানাধীন ছিল। রহমান শরীফের মেয়ের সঙ্গে তানভীর ইমামের বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু ২০০১ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
 

একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টা জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে গুলশানের ওই বাসায় অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসরদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ২০-২৫ জনের একটি দল বাসায় ঢুকে তল্লাশি চালানোর চেষ্টা করে। বাসাটি তছনছ, ভাঙচুর এবং লুটপাটের চেষ্টা চালানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার জন্য এবং অপরাধ ঘটলে থানায় জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
 

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রী ওই বাসায় থাকেন। সোমবার রাতে ৪০-৫০ জনের একটি দল পুলিশ সহ বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কাউকে না পেয়ে তারা ফিরে যায়। পরদিন মঙ্গলবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আবারও ৪০-৫০ জনের একটি দল গুলশানে ওই বাসার সামনে জমায়েত হয়। নিরাপত্তা কর্মী বাধা দিলে কিছু লোক দেয়াল টপকে বাসায় ঢুকে তালা ভাঙে। এরপর তারা বাসার চারতলায় গিয়ে তানভীরের সাবেক স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কেয়ারটেকার ও গাড়িচালক আব্দুল মান্নান এবং দুই গৃহকর্মীকে আটক করে। তারা আলমারি ভেঙে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। খবর পেয়ে গুলশান থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে জুয়েল ও তার ছেলে শাকিল খন্দকারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
 

আবদুল মান্নান জানান, রাতে লোকজন বাসার দরজার ছিটকিনি ভেঙে ঢুকে তছনছ করে এবং লুটপাট চালায়। এ ঘটনায় তিনি গুলশান থানায় মামলা করেছেন, যেখানে ১৪-১৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মোটরচালক দলের সভাপতি সেলিম রেজা বাবু জানিয়েছেন, জুয়েল খন্দকার একসময় দলের সদস্য ছিলেন, কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাঁকে বহিষ্কার করা হয় এবং পরে তিনি আলাদা একটি দল গঠন করেন।
 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার তারেক মাহমুদ জানান, শাকিল আহমেদ এক সময় ওই বাসার কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন এবং তিনি জুয়েল খন্দকারকে তথ্য দিয়েছিলেন যে, ওই বাসায় ২০০-৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে। মূলত তারা লুটপাটের উদ্দেশ্যে ওই বাসায় প্রবেশ করেছিল।
 

গুলশান থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫