দেশ পুনর্গঠনে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেওয়া জরুরি: তারেক রহমান

যশোর প্রতিনিধি:-

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারেক রহমান, বলেছেন— "জনগণের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কখনো কোনো কাজ করে না। যারা বিভ্রান্ত হয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই বিএনপির বিরুদ্ধে কারও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। বিএনপিই প্রমাণ করেছে যে, অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করবে না। দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী, দেশ পুনর্গঠনে দ্রুততম সময়ে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন দেওয়া জরুরি।"
 

আজ শনিবার, যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঈদগাহ ময়দানে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
 

তারেক রহমান আরও বলেন, "এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু একমাত্র বিএনপি স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আড়াই বছর আগে দেশ পুনর্গঠনের কথা বলেছিল এবং ৩১ দফা ঘোষণা করেছিল। বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্যই হলো জনগণ এবং দেশ। তাই, ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন বিএনপির পক্ষেই সম্ভব। বিএনপি যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়, তবে সবার আগে দেশ পুনর্গঠন করবে।"
 

আজ সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। বেলা সাড়ে ১০টায় ঈদগাহ ময়দানে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
 

সম্মেলনের শুরুতে, বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত দলের নেতাকর্মীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এছাড়া, সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতা, বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। এরপর, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।
 

এদিকে সম্মেলন ঘিরে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা ছিল উচ্ছ্বসিত। শহরের প্রধান সড়কগুলো ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো ছিল এবং জাতীয় নেতাদের নামে নির্মিত তোরণগুলো উৎসবের আমেজ তৈরি করেছে।
 

সম্মেলনের জন্য সকাল ৯টা থেকেই ডেলিগেট, কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা আসতে থাকেন। সকাল ১০টার মধ্যে সম্মেলনস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। জেলা, উপজেলা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে উপস্থিত হন।
 

নেতাকর্মীরা জানান, যারা দলীয় দুর্দিনে ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা যেন সঠিক মূল্যায়ন পান। তারা আরো জানান, দলকে সুসংগঠিত করে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী করতে ভূমিকা রাখবে এমন নেতৃত্ব তারা চান।
 

সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালে জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর, ১৬ বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
 

সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন— জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, এবং যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম মারুফ। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে লড়ছেন— মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, রবিউল ইসলাম, কাজী আজম, এবং শহিদুল বারী রবু। বিএনপি নেতাকর্মীদের মতে, এই পদগুলিতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, তবে ত্যাগী এবং যোগ্য নেতারাই জয়ী হবেন।
 

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ভোটগ্রহণ শুরু হবে আজ দুপুর ২টায়। ১৬১৬ ভোটার ভোট প্রদান করবেন। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে।
 

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, এবং সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু।