মূল্যস্ফীতি কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মূল্যস্ফীতি কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি এখন বড় বিষয়। এটি কমাতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি জোর করে কমানো যায় না। কার্যকর নীতি নিতে হবে। আমি ঝুঁকি নিয়ে বলতে পারি, চলতি আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি ২-৪ পয়েন্ট কমবে।’
শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি কমেছে, বাংলাদেশ কেন পারল না—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে এখনো মূল্যস্ফীতি ২০ শতাংশের মতো। শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতি কমেছে, কিন্তু ওই দেশের জনগণকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে বলে ওই দেশের মন্ত্রীই বলেছেন। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে বেড়েছে, কমছেও ধীরে ধীরে, টেকসইভাবে। চার মাস ধরে এক কদম, দুই কদম করে মূল্যস্ফীতি কমেছে।
এম এ মান্নান বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ধারা আমরা বন্ধ করতে পেরেছি। মজুরি হার বেড়েছে। এ জন্য মূল্যস্ফীতিজনিত আয়ের যে ফারাক, তা কিছুটা কমেছে।’ আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিকস সম্মেলন নিয়েও কথা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমরা এখন ব্রিকসের বারান্দায় অপেক্ষমাণ আছি। সদস্য হতে কিছু প্রক্রিয়া বাকি আছে, তা সম্পন্ন করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।’
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ ছাড়া ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে আমাদের ১ শতাংশ শেয়ার আছে, যা বিশ্বব্যাংক, এডিবির চেয়ে বেশি। এই নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে কীভাবে ঋণ নেওয়া যায়, তা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, হাসপাতাল বানানোর প্রকল্প পাসের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়, লোকবল নিয়োগ হয় না, এটা খুব বিরক্তিকর। এ বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। অবকাঠামো নির্মাণের সময় জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়াটি শুরু করতে হবে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর জন্য তিনি আবার নির্দেশ দিয়েছেন।
সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, দেখা গেছে, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের কারণে জলাবদ্ধতা হয়েছে। এ ধরনের প্রকল্প নেওয়ার সময় সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে কি না। জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক সময় নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’
এ ছাড়া চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পানি সরে যাওয়ার জন্য নালার তলদেশ পাকা করা যাবে না। এ ছাড়া স্লুইসগেট তৈরির সময় সব দিক বিবেচনা করবেন। এ নিয়ে অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়। এ ছাড়া দক্ষতা উন্নয়নের একটি প্রকল্পে কক্সবাজার এলাকায় সার্ফিং পেশাকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে একনেক সভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, ‘উনার প্রোপাগান্ডা মেশিনারি খুব স্ট্রং।’
এদিকে আজকের একনেক সভায় সব মিলিয়ে ২০টি প্রকল্প পাস হয়। এতে খরচ হবে ১৪ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ৮০৯ কোটি টাকার জোগান দেবে সরকার। বিদেশি সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ১ হাজার ৪৯ কোটি টাকা। আর বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৬১৯ কোটি টাকা।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫