দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ঘূর্ণিঝড়-বন্যায় মানবিক সংকট, চার দেশে সহস্রাধিক হতাহতি
অনলাইন ডেস্ক
গত ১০ দিনে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একাধিক ঘূর্ণিঝড়, প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বড় ধরনের মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে প্রাণহানি ছাড়িয়ে গেছে সহস্রাধিক মানুষ। কয়েক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। মালয়েশিয়াতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দামান সাগর, মালাক্কা প্রণালি ও বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার ইন্দোনেশিয়াকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এখানে এখন পর্যন্ত ৬০৪ জন নিহত, প্রায় ৫০০ নিখোঁজ। থাইল্যান্ডে ১৭৬ জন, মালয়েশিয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ শ্রীলঙ্কায় তাণ্ডব চালায়; এতে ৩৩৫ জন নিহত ও প্রায় ৪০০ নিখোঁজ।
ইন্দোনেশিয়া.....
সুমাত্রা ও আশেপাশের দ্বীপাঞ্চল ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ারের তাণ্ডবে তছনছ হয়েছে। চার লাখ ৮২ হাজার বর্গকিলোমিটারের এই অঞ্চল থেকে ৬০৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, এখনও পাঁচ শতাধিক নিখোঁজ। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে সরকার, তবে কিছু গ্রামে ত্রাণের অভাব রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, মানুষ খাবার, ওষুধ ও জ্বালানি সংগ্রহ করতে প্লাবিত রাস্তা, ভাঙা কাঁচ ও বন্যার মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা পরিস্থিতি জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
থাইল্যান্ড....
ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ারের প্রভাবে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে ১৭৬ জন নিহত, কমপক্ষে ৩৫ লাখ মানুষ বন্যার শিকার। দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বন্যার পানি ধীরে ধীরে নেমে আসছে এবং ত্রাণ, সড়ক যোগাযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়া.....
কম হলেও প্রভাব পড়েছে মালয়েশিয়ায়। এখানে তিনজন নিহত, সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে পেরলিস, পেরাক, কেদাহ, সিলানগর, কালাতান ও পাহাঙ অঞ্চলে।
শ্রীলঙ্কা....
ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহ শ্রীলঙ্কায় বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এ পর্যন্ত ৩৯৫ জন নিহত, প্রায় ৪০০ নিখোঁজ। অন্তত ১১ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৫ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, প্রায় দেড় লাখ মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
কারণ....
জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়ায় এই বিধ্বংসী বন্যার আংশিক কারণ দীর্ঘস্থায়ী লা নিনা চক্র। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাংশ স্বাভাবিকের চেয়ে শীতল এবং পশ্চিমাংশ উষ্ণ হওয়ায় এশিয়ার বায়ুমণ্ডলে অতিরিক্ত আর্দ্রতা তৈরি হয়। এর ফলে প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনসের মতো দেশগুলোতে ঝড় ও মৌসুমি বৃষ্টিপাত আরও শক্তিশালী হয়।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫