তওবা ও ইস্তিগফার: পাপ থেকে মুক্তির পথ

প্রকাশকালঃ ০২ জুন ২০২৪ ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ ৪৪০ বার পঠিত
তওবা ও ইস্তিগফার: পাপ থেকে মুক্তির পথ

বিপথগামী হলে সেখান থেকে ফিরে আসার জন্য তওবা করা আবশ্যক। সহজ ভাষায় খারাপ থেকে ভালো পথে ফিরে আসাকে তওবা বলা হয়। আর ইস্তিগফার অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদারেরা, তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করো, আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে ঝরনাসমূহ প্রবহমান।’ (সুরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৮)

 

অপর আয়াতে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই যারা গোপন করে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ ও হেদায়াত যা আমি নাযিল করেছি, কিতাবে মানুষের জন্য তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করার পর, তাদের আল্লাহ লা’নত করেন এবং লা’নতকারীগণও তাদের লা’নত করে। তারা ছাড়া যারা তওবা করেছে, শুধরে নিয়েছে এবং স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছে। অতএব, আমি তাদের তওবা কবুল করবো। আর আমি তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৯-১৬০)

 

খোদ রাসুলুল্লাহ (সা.) ও নিষ্পাপ হওয়ার পরও দিনে ৭০ বারের বেশি তওবা ও ইস্তিগফার করতেন। আবূ হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি- আল্লাহর কসম! আমি প্রত্যহ আল্লাহর কাছে সত্তরবারেরও বেশি ইস্তিগফার ও তওবা করে থাকি। (সহিহ বুখারি, ৫৮৬৮)

 

অন্যদিকে, বান্দা খাস মনে তওবা করলে মহান রাব্বুল আলামিনও খুশি হন। হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা বান্দার তওবার কারণে সেই লোকটির চাইতেও বেশি খুশি হন, যে লোকটি মরুভূমিতে তার উট হারিয়ে পরে তা আবারও পেয়ে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৮৭০)

 

এ ক্ষেত্রে সর্বোত্তম ইস্তেগফার বা সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার বাতলে দিয়েছেন নবীজি। হাদিসে এসেছে, শাদ্দাদ ইবনু আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দোয়া পড়া- ‘হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম।

 

আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের ওপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছো তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারণ তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।

 

আরবিতে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার-

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ 


উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্‌দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্‌রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্‌ফির্‌লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্‌যুনূবা ইল্লা আনতা।


হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হওয়ার আগেই যদি সে মারা যায়, তবে সে জান্নাতি হবে। আর যে ব্যক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দোয়া পড়ে নেবে, আর যদি ভোর হওয়ার আগেই সে মারা যায় তবে সে জান্নাতি হবে। (সহিহ বুখারি: হাদিস: ৫৮৬৭)