ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিটি গ্রুপ ২০৩০ সালের মধ্যে ৫৫ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চুক্তিভিত্তিক কর্মীসহ এ সংখ্যা মোট শ্রমশক্তির ৪০ শতাংশ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আগামী সাত বছরে এসব কর্মী ছাঁটাই করা হবে।
বিটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) ফিলিপ জ্যানসেনের তত্ত্বাবধানে জাতীয় ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরির পাশাপাশি উচ্চগতির ফাইভ–জি মোবাইল পরিসেবা চালু করার জন্য একটি রূপান্তরিত পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজ করছে।
ফিলিপ জ্যানসেন বলেছেন, বিটি গ্রুপ কাজের পদ্ধতিতে অটোমেশন আনতে চায়। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজ করতে চায়। এ কারণে ২০২০–এর দশকের শেষ নাগাদ প্রতিষ্ঠানটির কর্মীসংখ্যা অনেক ছোট করে ফেলা হবে এবং ব্যয় কমিয়ে আনা হবে।
ফিলিপ আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১ লাখ ৩০ হাজার কর্মী আছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী। ২০৩০ সালের অর্থবছরে এই কর্মীর সংখ্যা ৭৫ হাজার থেকে ৯০ হাজারে কমিয়ে আনা হবে। তিনি বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।
কমিউনিকেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (সিডব্লিউইউ) বলছে, অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত যে পরিবর্তন আসছে, তাতে কর্মী ছাঁটাই করা ‘আশ্চর্যের কিছু নয়’। তবে বিষয়টি সহজভাবে করার জন্য বিটি ও সিডব্লিউইউর মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। বিটির উচিত হবে স্থায়ী কর্মীদের রেখে চুক্তিভিত্তিক কর্মী কমিয়ে দেওয়া।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিটি গ্রুপের প্রতিদ্বন্দ্বী ভোডাফোন গত মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে তারা বিশ্বব্যাপী ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে।
বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স—এআই) ওপর জোর দিতে শুরু করেছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়তে যাচ্ছে কর্মীদের ওপর। কারণ, প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাই করে এআই প্রযুক্তি চালুর দিকেই যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস করপোরেশন বা আইবিএম বর্তমানে কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। আগামী কয়েক বছরে ৭ হাজার ৮০০ কর্মী ছাঁটাই করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়োগ করবে প্রতিষ্ঠানটি।
গত মাসের শেষের দিকে আইবিএমের প্রধান নির্বাহী (সিইও) অরবিন্দ কৃষ্ণা এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাঁরা প্রতিষ্ঠানটির এক–তৃতীয়াংশ কর্মী কমানোর ওপর নজর দিচ্ছেন। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতির কারণে ওই সব কর্মী এখন অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছেন।