ইসলামের কিছু ইবাদত ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ সবার জন্য। আর কিছু ইবাদত নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা শ্রেণির মানুষের জন্য। বহু হেকমত ও রহস্য সামনে রেখে ইসলামের বিধি-বিধানে এসব তারতম্য রাখা হয়েছে। হজের বিধানটিও অনুরূপ।
শুধু ধনীদের জন্য হজ ফরজ হওয়ার কারণ হলো—
১. ধনী মানুষের ক্ষেত্রে বিলাসিতা ও অহংকার করা প্রাণঘাতী রোগ। দূর-দূরান্তে ভ্রমণ করা, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের ত্যাগ করা, ঠাণ্ডা-গরম সহ্য করা, বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানচর্চা করা, মাজহাব ও রীতি-নীতি সম্পর্কে অবগত হওয়া, অলসতা ও প্রবৃত্তি পূজারির মূলোৎপাটন—এসব কাজ ধনীদের পক্ষে করা সহজ। তাই শুধু ধনীদের ওপর হজ ফরজ করা হয়েছে।
২. হজের কার্যাদি অহংকার ও গর্বের জন্য শত্রুতুল্য। সাজসজ্জা বর্জন করা, মুসাফিরদের সঙ্গে উন্মুক্ত মাথায় চলাফেরা করা গর্ব ও অহংকার নির্মূলে সহায়ক। তা ছাড়া হজ বিত্তশালী বিলাসীদের জন্য অসাধারণ সাহসিকতা তৈরিতে সহায়ক। মোটকথা হজ এমন একটি জিনিস, যা মুসলমানদের অভিজ্ঞ ও সচেতন করে তোলে।
৩. নিঃসন্দেহে এক দেশের কল্যাণসমূহ অন্য দেশে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বিত্তশালী লোক যেভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, অনুরূপ ভূমিকা দরিদ্র লোক রাখতে পারে না।
৪. অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, বহু ধনী মানুষের পাপের পরিমাণ ও পরিধি অনেক বেশি, কিন্তু এরাও আল্লাহর বান্দা। মহান আল্লাহ তাদের মাফ করা ও জান্নাতে যাওয়ার উপযোগী করার জন্য তাদের ওপর হজ ফরজ করে দিয়েছেন।