বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি

ঢাকা প্রেস নিউজ
দেশের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দুই অঙ্কে উন্নীত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া, আর্থিক খাতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, ঋণের সুদহার হ্রাস, স্থানীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগের সম্প্রসারণে নীতিগত সহায়তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, অবকাঠামো খাতে সমন্বিত উন্নয়ন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ভ্যাট কমানো, এবং শিল্প খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সহায়ক জ্বালানি মূল্য নীতিমালা প্রণয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিদ্যমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ এসব মতামত ব্যক্ত করেন। ঢাকা চেম্বারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিসিসিআই সভাপতি সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙতে আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ভ্যাট কমানোর পাশাপাশি বিলাসবহুল পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণে নীতি সহায়তার ধারাবাহিকতা, অবকাঠামো খাতের সমন্বিত উন্নয়ন, এবং বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে আফ্রিকার বাজারে মনোযোগী হওয়ার উপরও জোর দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আব্দুর রহিম খান বলেন, ৫০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে মাত্র ৪০ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আহরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি অটোমেশন ও ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ সঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, লজিস্টিক পলিসি এবং বাণিজ্য সহায়তা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে সামগ্রিক বাণিজ্য ব্যয় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমানো সম্ভব।
নির্ধারিত আলোচনায় পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় উদ্যোগে বিলম্ব এবং অতিরিক্ত টাকা ছাপানোর কারণে বিগত দিনগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করায় ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। তিনি জানান, রিজার্ভ সংকটের কারণে কাঁচামাল ও মেশিনারিজ আমদানিতে বিধি-নিষেধের ফলে সাপ্লাই চেইনে স্বল্পতা দেখা দেয়, যার প্রভাব সামগ্রিক অর্থনীতিতে পড়েছে। তিনি আরো জানান, রিজার্ভ ২৫ থেকে ২৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হলে শিল্প খাতে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে স্বল্পতা দূর হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বাজেট, মুদ্রানীতি ও বাজার ব্যবস্থার মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিল্প খাতে কমপ্লায়েন্স বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫