ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে একটি মন্দিরের বারান্দায় থাকা নির্মাণাধীন কয়েকটি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ইউনিয়নের যমুনা সরকারপাড়া সর্বজনীন কালী মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান এবং মন্দির কমিটির সভাপতি নিতাই লাল সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ ও স্থানীয় সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। ঘটনার পরপর পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তদন্তে নেমেছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পূজা উদযাপনের উদ্দেশ্যে মন্দির প্রাঙ্গণে কয়েকটি প্রতিমা নির্মাণ করা হচ্ছিল। ১০ থেকে ১২ দিন ধরে এ কাজ চলছিল। মন্দিরের বাইরে প্রতিমা কারিগর পাঁচটি প্রতিমার কাঠামো তৈরি করে তাতে কাদা লাগানোর কাজ শুরু করেছেন। নির্মাণাধীন প্রতিমাগুলো মন্দিরের বরান্দায় রাখা ছিল। শনিবার সন্ধ্যার পর কে বা কারা প্রতিমাগুলোর একটি মন্দিরের বারান্দায় উল্টে ফেলে রাখে। আর চারটি প্রতিমা মন্দিরের পেছনে নিয়ে ফেলে দেয়। তবে কারা এ ঘটনায় জড়িত তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
বিষয়টি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে শনিবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উলিপুর থানা পুলিশ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মন্দির কমিটির সভাপতি নিতাই লাল সরকার বলেন, ‘আমরা অনেক বছর ধরে এই এলাকায় হিন্দু-মুসলমান সহাবস্থান ও সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করছি। এ ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। কোনও হুমকিও ছিল না। হঠাৎ কারা এ ধরনের ঘটনা ঘটালো, তা বুঝে আসছে না। আমরা হতভম্ব, নির্বাক।’
‘মন্দিরের ভেতরের প্রতিমার কোনও ক্ষতি করেনি। যে প্রতিমাগুলো নষ্ট করেছে সেগুলোর এখনও নির্মাণ শেষ হয়নি। শুধু কাঠামো তৈরি করে কাদা লাগানো শুরু করা হয়েছে। শুকানোর জন্য সেগুলো মন্দিরের বাইরে রাখা ছিল। এর মধ্যে কারা এমন কাজ করলো তা জানি না। পুলিশ ও প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে’—যোগ করেন নিতাই লাল সরকার।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছি। কারা এসব কাজ করেছে জানা যায়নি। স্থানীয় কেউ কাউকে দেখেনি। কী কারণে বা কী উদ্দেশ্যে কারা এমন কাজ করেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’
ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘রবিবার দুপুর পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তারপরও আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। যারাই জড়িত থাকুক খুঁজে বের করা হবে।’
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউর রহমান বলেন, ‘প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।’