ঢাকা প্রেস নিউজ
১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এ বছর জাতি উদযাপন করতে যাচ্ছে ৫৩তম বিজয় দিবস। যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতা, সেই সূর্যসন্তানদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত করা হয়েছে নতুন সাজে। শহীদদের স্মরণে বর্ণিল আলোকসজ্জা ও বাহারি ফুল দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে পুরো সৌধ এলাকা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নেওয়া হয়েছে জোরদার পদক্ষেপ।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ হিসেবে লাল-সবুজের স্মারক এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ, যা দাঁড়িয়ে আছে ১০৮ একর জমির ওপর। প্রতি বছরের মতো এবারও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মৃতিসৌধে ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও বাহারি রঙের ফুল দিয়ে সাজানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। লাইটিং এবং রং-তুলির কাজও শেষ হয়েছে। রাতের আঁধার কাটিয়ে ১৬ ডিসেম্বর সকালে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে লাখো মানুষ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা সহ স্মৃতিসৌধে সমবেত হবে। শহীদ বেদী তখন ফুলের চাদরে ঢেকে যাবে।
এবারও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দেশবাসী। প্রবীণদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক কাতারে সমবেত হবে। স্মৃতিসৌধের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা এবং কয়েকশ’ নিরাপত্তাকর্মীর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য তিন বাহিনীর সুসজ্জিত দলের মহড়াও শেষ হয়েছে।
স্মৃতিসৌধের পরিচ্ছন্নতাকর্মী জমেলা জানান, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে কাজ করছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিতে পারলেও, যাদের আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তাদের স্মৃতিসৌধ পরিচ্ছন্ন রাখতে পেরে আমরা গর্বিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারব, আমরা এই বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কাজ করেছি।”
গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, “বিজয় দিবস উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর, অন্যান্য উপদেষ্টা, সচিব, কূটনীতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করা হবে।”
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন জানান, বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে স্মৃতিসৌধে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তৎপর রয়েছে এবং প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে। আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সব স্থানে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
মহান বিজয় দিবসে লাখো মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে স্মৃতিসৌধ। পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও শ্রদ্ধা জানাবেন।