নারায়ণগঞ্জে পানির বিল ও হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ
প্রকাশকালঃ
০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:০৬ অপরাহ্ণ ২৪৭ বার পঠিত
ঢাকা ওয়াসা থেকে পানি সরবরাহে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) দায়িত্ব নেওয়ার পর গ্রাহকরা বিল নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এর পাশাপাশি বন্দর অঞ্চলে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়েও চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এ ব্যাপারে পানি বিল ও হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধে সিটি করপোরেশনে হাজারো গ্রাহকের চাপে সময় বৃদ্ধি করেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, আগস্ট-২০২৩-সহ পানির বকেয়া বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
জানা যায়, ঢাকা ওয়াসা থেকে পানি সরবরাহের দায়িত্ব নেওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে পানির গ্রাহকদের দুর্ভোগের শিকার শুরু হয়। এরই মধ্যে চলতি বছরের ৩১ মের আগে জুন-জুলাই মাসে পানির বিল তারা সরবরাহ করতে পারেনি। ফলে মে, জুন, জুলাই ও আগস্ট মোট চার মাসের একত্রে বিল গ্রাহকদের হাতে তুলে দেন নাসিক ওয়াসা কর্মকর্তারা। জানা যায়, চার মাসের বিল ইস্যুর তারিখ ছিল ৩ সেপ্টেম্বর আর বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল ২৮ সেপ্টেম্বর। কিন্তু বন্দরের গ্রাহকরা এই বিলের কপি পেয়েছে ২৪ সেপ্টেম্বরের পর।
গ্রাহকরা জানিয়েছেন, চার মাসের বিল পরিশোধে তাদের সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র পাঁচ দিন। তার মধ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ছুটি ছিল। এর মধ্যে গত ১ অক্টোবর থেকে নাসিকের দেওয়া পানির বিল নেওয়ার ক্ষেত্রেও গাফিলতির প্রমাণ মেলে। একপর্যায়ে বিল নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিল না নেওয়ার ব্যাপারে গ্রাহকরা প্রশ্ন করলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নাসিক ওয়াসা বিভাগ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বরের পর কোনো বিল গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা বকেয়া বিল দিতে পারেননি, তাদের সেপ্টেম্বরের বিলের সঙ্গে যোগ করে নতুন করে বিল দেওয়া হবে। এতে শত শত গ্রাহক ব্যাংকের ভেতর হইচই শুরু করলে এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পিএ-টু আবুল হোসেনের সহযোগিতায় ব্যাংক ম্যানেজারকে বিল নেওয়ার নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে সিটি করপোরেশনের বন্দর অঞ্চলের হোল্ডিং ট্যাক্সের কর্মকর্তাদের অবহেলা ও গাফিলতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে গ্রাহকরা। এ ব্যাপারে মেয়র আইভীর কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে বাড়ির মালিকরা। সিটি করপোরেশনের বন্দর অঞ্চলে সরেজমিনে দেখা গেছে, শত শত হোল্ডিং ট্যাক্স গ্রাহকদের দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়ে আছে। এর মধ্যে নবীগঞ্জের একজন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের নতুন জরিপে আমাদের ট্যাক্স অতিরিক্ত এসেছে।
এ ব্যাপারে বন্দর অঞ্চলের ট্যাক্স রুমে এলে তারা ২০০ টাকার বিনিময়ে মওকুফের একটি আবেদন পূরণ করে রাখেন ১১ জুন। কিন্তু আমাদের এ পর্যন্ত মওকুফের কোনো ফোন বা নতুন ট্যাক্সের কাগজ বাসায় পাঠায়নি। তারা আবেদন গ্রহণের সময় জানিয়েছিলেন, মেয়র ছাড় দিলে বাসায় কাগজ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা দুর্ভাগা, কাগজ তো দূরে কথা ফোনও পাইনি। অবশেষে সিটি করপোরেশনের বন্দর অঞ্চলের ট্যাক্স বিভাগে আসলে আমরা আবেদন ফরমের হিসাবে ২০ ভাগ ছাড় দিলেও ২২-২৩ বছরের ট্যাক্সের আরও বকেয়া উঠিয়ে দিল। ২২-২৩ বছর প্রথমে জুলাই মাসেই আমাকে পরিশোধের বিলে দিয়েছে। আজই আমাদের এই ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। এদিকে বন্দর অঞ্চলের ট্যাক্স বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ‘লোকজন কম ও সার্ভার সমস্যার কারণে কাঙ্ক্ষিত সময়ে আমরা ট্যাক্সের কপি গ্রাহকদের হাতে পৌঁছাতে পারিনি। তবে এ সেবা আমরা দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করব।’