ঢাকা প্রেস
বিশেষ প্রতিনিধি (কুমিল্লা):-
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলার ঘটনায় মামলায় নাম উল্লেখ করা হলেও তারা দুজনই মৃত.......
কুমিল্লায় ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে। মামলার আসামি হিসেবে দুইজন মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গত ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে ৯৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও, মামলার নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তার মধ্যে দুইজন আগেই মারা গেছেন।
মৃত আসামিদের মধ্যে একজন মো. মমিন, যিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি গত ২৪ জুন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান।
এ বিষয়ে মৃত আওয়ামী লীগ নেতা মমিনের ছেলে মো. সাঈফ বলেন, আমার বাবা চলতি বছরের ২৪ জুন ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মামলার বিষয়টি এইমাত্র জানলাম। আমার বাবা তো জুনেই মারা গেছেন। তিনি কী করে ৪ আগস্টের হামলার ঘটনায় মামলার আসামি হন,আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
আরেকজন ওয়াহিদুর রহমান ফরিদ, যিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে কিডনিজনিত সমস্যায় মারা যান।
এ বিষয়ে মৃত আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান ফরিদের বড় ছেলে মো. ফরহাদ ঢাকা প্রেসকে বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। তিনি কিডনিজনিত সমস্যার কারণে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর এক বছর পরের ঘটনার মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। এটা কেমন অবিচার? একজন মৃত মানুষ কী করে আসামি হতে পারেন?
মামলার বাদী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুবির সমন্বয়ক মো. এমরান ঢাকা প্রেসকে বলেন, মামলার অভিযোগ এবং অভিযুক্তদের নাম ঠিক আছে। আসামিদের নাম শনাক্তে কোনো ভুল আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি।
সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্ত চলছে এবং মৃত ব্যক্তির নাম যদি ভুল করে উল্লেখ করা হয়ে থাকে, তবে তা তদন্তে বাদ দেওয়া হবে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, সদর দক্ষিণ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন অপু, সাধারণ সম্পাদক তুহিনসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
এই ঘটনা আইন প্রশাসনের দক্ষতার ওপর প্রশ্ন উঠেছে। মৃত ব্যক্তিদেরকে মামলার আসামি করা কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।