একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইভা, কঠিন বিড়ম্বনায় পড়েছেন কোটায় ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা

প্রকাশকালঃ ২৪ জুলাই ২০২৩ ০৩:০৫ অপরাহ্ণ ১৭১ বার পঠিত
একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইভা, কঠিন বিড়ম্বনায় পড়েছেন কোটায় ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা

কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন রেদোয়ান আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী। উদ্দেশ্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক ইউনিটে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ভাইভা দেওয়া। কিন্তু একই দিনে গুচ্ছভুক্ত একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি কোটায় ভাইভা থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন এই শিক্ষার্থী।

জানা যায়, সোমবার (২৪ জুলাই) গুচ্ছভুক্ত একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটার শিক্ষার্থীদেরকে ভাইভার আহ্বান করেছে।

২৪ তারিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২৪ ও ২৫ তারিখে কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি কোটার শিক্ষার্থীদের ভাইভাতে ডাকা হয়েছে। ফলে রেদোয়ানের মতো অনেক শিক্ষার্থী পড়েছে বিড়ম্বনায়। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, ঠিক করতে পারছে না অনেকেই।


ভুক্তভোগী রেদোয়ান আহমেদের মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি কোটা আছে। আবেদন করেছে গুচ্ছভুক্ত ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভাইভার জন্য ডাকায় কঠিন বিড়ম্বনায় পড়েছেন কোটায় ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। শুধু রেদোয়ান নয়, একই অবস্থার শিকার ঝিনাইদহ থেকে আগত অর্কিত কুমার নাথ। 

গুচ্ছে ৫৪.৫০ মার্ক পেয়ে আবেদন করেছেন গুচ্ছভুক্ত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করছেন তিনি। ভুক্তভোগী রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমি গুচ্ছ অন্তর্ভুক্ত ৭ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিকভাবে ভর্তি হয়েছিলাম। 


বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি ৫০০ টাকা লেগেছে। এখন একই দিনে কিভাবে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাক্ষাৎকারে যাব? অর্কিত কুমার নাথ অভিযোগ করে বলেন, গুচ্ছ ভর্তি কমিটি যদি সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত না নিতে পারেন, তাহলে আমাদের থেকে ৫০০ টাকা কেন নিল?

কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও কোটার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন তারা। গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজভাবে কোটার ভর্তি ভাইভা তারিখ ধার্য করছে।

ফলে একই দিনে কোটা ভর্তি ভাইভাতে ডাকা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। তবে গুচ্ছ ভর্তির সমন্বয়হীনতার দায় নিতে নারাজ গুচ্ছ ভর্তি কমিটি।


এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই দিনে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাক্ষাতে ডাকলে আমাদের কিছু করার নেই। কেন্দ্রীয় কমিটি সমন্বয় করলে একই সঙ্গে হতো না।

একই কথা বলেন, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মেহের আলী। তিনি বলেন, আমরা জেনেছি যে একই দিনে কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাক্ষাৎ পড়েছে কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থীর আবেদন এসেছিল তাদেরকে একদিন আগে বা পরে সুযোগ দেওয়া হয়েছে কমিটির অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে।


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব হাফিজুর সেলিম বলেন, আমরা এই সমস্যার কথা বুঝতে পারছি। কেউ কাগজপত্রসহ এক দিন পরে আসলেও আমরা সাক্ষাৎ নেব বঞ্চিত করব না।

তবে সমন্বয়হীনতার এই দায় নিতে চায় না গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদউদ্দীন আহমদ। 

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সব বিষয় তদারকি করতে পারবে না। কোটার বিষয় স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা নিজেদের মতো করে সাক্ষাৎ নেবে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা জানি না এ বিষয়ে।