|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৯ জুলাই ২০২৫ ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৮ জুলাই ২০২৫ ১২:০৭ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রে ইইউ পণ্যে ১৫% শুল্ক: বাণিজ্য চুক্তিতে সমঝোতা


যুক্তরাষ্ট্রে ইইউ পণ্যে ১৫% শুল্ক: বাণিজ্য চুক্তিতে সমঝোতা


অনলাইন ডেস্ক:-

 

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দীর্ঘ আলোচনা শেষে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। এ চুক্তির আওতায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। মাসব্যাপী চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে এই সমঝোতায় পৌঁছায় দুই অর্থনৈতিক শক্তিধর।
 

বর্তমানে স্কটল্যান্ড সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের মাধ্যমে এই চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, “আমরা একটি ভালো সমঝোতায় পৌঁছেছি। এটি উভয়ের জন্যই লাভজনক এবং সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করবে।”
 

চুক্তি অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ছয়শ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, যার মধ্যে শুধু জ্বালানি খাতে ব্যয় হবে সাড়ে সাতশ বিলিয়ন ডলার। এই বিনিয়োগের ফলে রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভরতা থেকে ইউরোপ ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ভন ডার লিয়েন।
 

এছাড়া আমেরিকান সামরিক সরঞ্জাম, এলএনজি, তেল ও পরমাণু জ্বালানিতে ইইউর আগ্রহের কথাও উঠে এসেছে আলোচনায়। তবে, নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে — যেমন কৃষিপণ্য, রাসায়নিক দ্রব্য এবং এয়ারক্রাফট ও এর যন্ত্রাংশে কোনো শুল্ক আরোপ করা হয়নি।
 

তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
 

এর আগে ট্রাম্প ইইউ দেশগুলোর রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। তার অভিযোগ, ইইউ মার্কিন বাজারে রপ্তানিতে সুবিধা নিচ্ছে, অথচ আমেরিকান পণ্যের ওপর তারা শুল্ক আরোপ করছে।
 

ভন ডার লিয়েন এই চুক্তিকে “স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্কের সূচনা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “ট্রাম্প একজন কঠিন আলোচক, কিন্তু একেবারে বাস্তববাদী এবং ডিলমেকার।”
 

চুক্তির ফলে ইইউকে যেখানে ৩০ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা ছিল, সেখানে ১৫ শতাংশ হারেই তারা রফতানির সুযোগ পাচ্ছে— যা জাপানের মতোই। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায়ের পাশাপাশি শত শত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে যাচ্ছে।
 

২০১৪ সালে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৯৭৬ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ৬০৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ইউরোপ থেকে আমদানি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই বাণিজ্য ঘাটতিই ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য মূল উদ্বেগের জায়গা ছিল।
 

এ চুক্তি না হলে, ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির ফলে স্পেনের ওষুধ, ইতালির চামড়াজাত পণ্য, জার্মানির ইলেকট্রনিকস এবং ফ্রান্সের চিজ শিল্প ক্ষতির মুখে পড়ত। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইইউ-ও গাড়ির যন্ত্রাংশ, বোয়িং বিমান এবং গরুর মাংসের ওপর শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
 

তবে ইউরোপের নেতারা চুক্তিকে সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেছেন, উচ্চ হারে শুল্ক বাণিজ্যকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলতে পারে। জার্মান চ্যান্সেলর সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেন, “স্থিতিশীল ও অনুমেয় বাণিজ্য সম্পর্ক সবার জন্যই উপকারী।” ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিও সমঝোতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
 

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন এবং ট্রাম্প মঙ্গলবার অ্যাবারডিনে নিজের পারিবারিক গলফ কোর্স পরিদর্শনে যাবেন, যা আগামী মাসে উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫