ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়রা, ঝড়ে মৃত্যু ১ নারীর

প্রকাশকালঃ ০১ জুন ২০২৪ ০৫:৫০ অপরাহ্ণ ৮১ বার পঠিত
ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েক মিনিটের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়রা, ঝড়ে মৃত্যু ১ নারীর

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ভোর রাতে হঠাৎ তীব্র ঝড়ে পাড়িয়া ও আমজানখোর ইনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও গাছপালা ভেঙ্গে ক্ষতির শিকার হন স্থানীয়রা। এসময ঝড়ের কবলে ঘরের টিনের চালা পড়ে রহিমা খাতুন (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। নিহত ওই নারী পাড়িয়া ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের কহিনুর ইসলামের স্ত্রী। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপেজলা প্রশাসনের কর্মকতাগণ।

 

নিহতের স্বামী জানায়, ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদে থাকা অবস্থায় ঝড় শুরু হয়। বাড়িতে এসে স্ত্রীকে খুজে না পেয়ে ডাকাডাকি করি। পরে বাতাসে উড়ে এসে বারান্দায় পড়ে টিন ও ছাউনি সরিয়ে দেখি নিচে চাপা পড়ে আছে স্ত্রী। উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

তবে রহিমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ঝড়ের সময় ভয়ে স্ট্রোক করেছেন বলে ধারণা পরিবারের।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঝড়ে পাড়িয়া ইউনিয়নের তিলকড়া, শালডাঙ্গা, বঙ্গভিটা, লোহাড়া, বামুনিয়া ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের বেলহাড়া, বেলবাড়ী, বটের হাট, হরিপুরসহ বেশকয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ কাঁচা বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙ্গে পড়েছে ঘরের উপর।

 

বড়বাড়ী ইউনিয়নের আধারদিঘী বাজারে ৫টি দোকান এবং ২টি হোটেল গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। ঘরের টিন নষ্টসহ সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী এবং সিমেন্টের ব্যবসায়ীর কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, বাজারে শতবর্ষী কিছু আমগাছ ছিল দীর্ঘদিনের। ঝড়ের কারণে সেই গাছের বড় ডাল ভেঙ্গে পড়েছে দোকানগুলোর টিনের ছাউনির উপর। এতে দোকানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

 

এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, ঝড়ে ৪০টির বেশি বৈদ্যুতিক খুটি উপড়ে এবং ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। সকাল থেকে আমাদের লোকজন মাঠে কাজ করছে।

 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, ঝড়ে মরিচ, বোরো ধান, পটলসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিসংখ্যান সংগ্রহে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এবং আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ করছে।

 

এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২ আসনের সংসদ সদস্য মাজহারুল  ইসলাম সুজন জানান, ঝড়ে দুই ইউনিয়নের বেশকয়েকটি গ্রাম ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তবে স্ট্রোক করে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।