|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২১ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:১৫ অপরাহ্ণ

জোবায়েদের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই ঘরে ফিরে বর্ষা


জোবায়েদের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই ঘরে ফিরে বর্ষা


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনাটিই সামনে থেকে দেখেছিল তার প্রেমিকা বর্ষা। পুলিশ জানায়, জোবায়েদ মৃত্যুপথযাত্রী অবস্থায় দোতলা থেকে উপরে ওঠেন। তখন তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষা। মৃত্যুর আগে জোবায়েদ তাকে অনুনয় করে বলেন, “আমাকে বাঁচাও।” কিন্তু বর্ষা জবাবে বলেন, “তুমি না মরলে আমি মাহীরের হতে পারব না।” এরপর মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে গেলে বর্ষা পঞ্চম তলায় নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে যায়।
 

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, “বর্ষা অত্যন্ত চতুরভাবে দুই দিকেই সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। এটি একটি ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনা—মিন্নির ঘটনার সঙ্গে এর আশ্চর্য মিল আছে।”
 

একইদিন সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি স্পষ্টতই বর্ষা ও মাহীরের পরিকল্পিত হত্যা। নয় বছর ধরে বর্ষা ও মাহীরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে বর্ষা জোবায়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং মাহীরকে দূরে সরিয়ে দেয়। পরে আবার জোবায়েদকে অপছন্দের কথা জানিয়ে মাহীরের সঙ্গে মিলে হত্যার পরিকল্পনা করে সে।
 

ওসি আরও জানান, প্রথমে বর্ষা হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও মাহীরকে মুখোমুখি করলে সব সত্যতা বেরিয়ে আসে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই হত্যার পরিকল্পনা শুরু হয় বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 

জোবায়েদ হোসাইন ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
 

অন্যদিকে, বর্ষা মহানগর মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। প্রায় এক বছর ধরে জোবায়েদ পুরান ঢাকার আরমানীটোলার নুরবক্স লেনে বর্ষাকে পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।
 

গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে বর্ষার বাসার সিঁড়িতে ওঠার সময় জোবায়েদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনাটির পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন।
 

সেদিন রাত ১১টার দিকে পুলিশ বর্ষাকে হেফাজতে নেয় এবং দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন তার গ্রামের বাড়িতে জোবায়েদ হোসাইনের দাফন সম্পন্ন হয়।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫