প্রকাশকালঃ
০৪ জুন ২০২৩ ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ ৯১ বার পঠিত
এবারের বাজেট থেকে উধাও শেয়ারবাজার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারের বিষয়ে তেমন কিছুই বলেননি অর্থমন্ত্রী। বাজেট বক্তব্যে শেয়ারবাজার প্রসঙ্গটি এসেছে করপোরেট করহার অপরিবর্তিত রাখাসংক্রান্ত ঘোষণায় পরোক্ষভাবে। সেখানে অর্থমন্ত্রী হিসাব দিয়েছেন, তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির করপোরেট করহার কার কত।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে শেয়ারবাজার নিয়ে কেন কিছু বলেননি, এমন প্রশ্ন ঘুরেফিরে এসেছে গতকাল বাজেট–পরবর্তী দুটি সংবাদ সম্মেলনে। যার একটি ছিল বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)। আরেকটি অর্থমন্ত্রীর বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন।
গতকাল সকালে অনুষ্ঠিত সিপিডির সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চান, বাজেটে অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজার প্রসঙ্গটি কেন এড়িয়ে গেলেন বলে মনে করে সিপিডি? জবাবে সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘পুঁজিবাজারের জন্য সবার আগে দরকার স্মার্ট সংস্কার। অনুদাননির্ভর বা সরকারের সাহায্যনির্ভর পুঁজিবাজার খুব বেশি দিন টিকতে পারবে না। দুঃখজনক হচ্ছে, আইএমএফের শর্তের মধ্যে পুঁজিবাজারবিষয়ক কোনো শর্ত নেই। যদি শর্ত থাকত, তাহলে আমরা দেখতাম সরকারের উদ্যোগ সেদিকে কতটা গিয়েছে।’
মোয়াজ্জেম আরও বলেন, ‘সিপিডি থেকে আমরা সব সময় বলেছি যে কোম্পানিগুলো বাজারে আসছে, সেগুলোর সম্পদ মূল্যায়ন নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। যেভাবে কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে এবং যারা সেগুলো নিরীক্ষা করছে, তাদের সম্পর্কে আমাদের আপত্তি রয়েছে। এত আপত্তির ভেতরে স্মার্ট সংস্কার ছাড়া কখনো স্মার্ট পুঁজিবাজার আশা করা যায় না।’
এদিকে গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত অর্থমন্ত্রীর বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও একই ধরনের প্রশ্ন করা হয়। এক সাংবাদিকের এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের পর অর্থমন্ত্রী জবাব দেওয়ার দায়িত্ব দেন অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনকে। তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজার নিয়ে বাজেটে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব রাখিনি। তবে এ বিষয়ে কিছু কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, আমরা গভর্নর স্যারের কাছে সে বিষয়ে জানতে পারি।’ এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। গত এক বছরে চারটি বড় সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য যে ধরনের নীতি সহায়তা দরকার, তা যথেষ্ট দেওয়া আছে। শেয়ারবাজারে মূলধন ও বন্ড—দুটি বাজার আছে। এখন বিএসইসি বন্ড বাজার উন্নয়নে কাজ করছে। শেয়ারবাজারের জন্য যে ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন, তা সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুরোপুরি দেওয়া হচ্ছে।
বাজেটকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে শেয়ারবাজারে লেনদেনে কিছুটা গতি দেখা গেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ৯৯৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা তাকিয়ে ছিলেন বাজেটের দিকে। বাজেটের আগে শোনা যাচ্ছিল, সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ করে প্রাপ্ত কর রেয়াত সুবিধা তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু বাজেটে এ ধরনের কোনো ঘোষণা দেননি অর্থমন্ত্রী। ফলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি অব্যাহত রয়েছে। এটিই এখন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য একমাত্র আশার কথা।