বিদেশিদের অবৈধ অবস্থান বাংলাদেশে বরদাশত করা হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০২:৩২ অপরাহ্ণ   |   ৬২৭ বার পঠিত
বিদেশিদের অবৈধ অবস্থান বাংলাদেশে বরদাশত করা হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা প্রেস নিউজ
 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্পষ্ট করে বলেছেন, কোনো অবৈধ বিদেশিকে বাংলাদেশে অবস্থান করতে দেয়া হবে না। দেশে কতজন বিদেশি নাগরিক আছেন, তাদের একটি সঠিক তালিকা প্রস্তুত করার পর তাদের অবস্থানের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে।
 

রোববার (৮ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। সাংবাদিকরা ধারণা করছেন, তার বক্তব্যের প্রধান ইঙ্গিত ভারতের নাগরিকদের উদ্দেশে। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে অপপ্রচার চালানোর পাশাপাশি, ‘হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে বাংলাদেশের দূতাবাস ও জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে।
 

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এটি হঠাৎ নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নয়। বিদেশিদের সংখ্যা ও তাদের দেশের তালিকা তৈরি করার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে অবৈধভাবে থাকা কোনো বিদেশিকে বাংলাদেশে থাকতে দেয়া হবে না।”
 

সীমান্ত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত রয়েছে এবং কোনো ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশ বরদাশত করা হবে না।”

 

আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে যোগ দিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশে আসছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 

বৈঠকে ভারতের নেতৃত্ব দেবেন বিক্রম মিশ্রি, আর বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মোহম্মদ জসীম উদ্দিন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
 

২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত শেষ এফওসি বৈঠকের পর এই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হতে যাচ্ছে। এবারের আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু, ভিসা ব্যবস্থার সহজীকরণ, সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উন্নয়ন।

 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ইস্যু ঘিরে ভারত নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
 

সম্প্রতি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ দেখা গেছে। ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে। এ ঘটনার জেরে বাংলাদেশ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
 

পরে ভারতও দুঃখ প্রকাশ করে এবং হামলার ঘটনায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তারসহ তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করে। এই ঘটনা এবং এর প্রতিক্রিয়া এবারের এফওসি বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।