|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২০ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৪:০০ অপরাহ্ণ

শাহ আলী (র.) মাজারে গাছ কেটে ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে: ফরহাদ মজহার


শাহ আলী (র.) মাজারে গাছ কেটে ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে: ফরহাদ মজহার


কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, “শাহ আলী (র.) মাজারের শতবর্ষী বটগাছ কেটে ফৌজদারি অপরাধ করা হয়েছে, এবং এর যথাযথ বিচার হওয়া উচিত। মাজারে তিনজন সরকারি উপদেষ্টা এসে বক্তব্য দিয়েছিলেন, কিন্তু তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও সম্মানও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গান-সংগীত বন্ধ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। আমরা আবার সেই সাধনা শুরু করেছিলাম, কিন্তু কেন তা বন্ধ হলো, তার জবাব মাজার কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে।”
 

শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর শাহ আলী (র.) মাজারে এই বক্তব্যটি তিনি দেন। এ সময় শতবর্ষী বটগাছ আংশিকভাবে কাটা হওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
 

ফরহাদ মজহার বলেন, “মাজার হলো মিলন মেলা, গণতন্ত্রেরও এক রূপ। যদি মিলন না থাকে, তবে গণতন্ত্রের অর্থ কী?”
 

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা যারা মাজারের ভক্ত, আশিক, জানি—এখানে বরকত আছে, আল্লাহর রহমত নেমে আসে। আজ যে গাছ কাটা হয়েছে, এটি কেবল একটি গাছ নয়। এটি ছিল পাখি, প্রাণী এবং সাধক-পাগলদের আশ্রয়। সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাজারের ইতিহাস, স্মৃতি, ভক্তি এবং সাধনার ধারা।”
 

সংবাদ সম্মেলনে কবি ও ফিল্মমেকার মোহাম্মদ রোমেল বলেন, “পীর-মুর্শিদ, ফকির, দরবেশ, সাধু-সন্তদের মাজার, দরগাহ, আখড়া—এগুলো শুধুমাত্র ধর্মীয় স্থান নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। ভক্তি ও ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষা থেকেই মাজার গড়ে ওঠে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক মাজার ধ্বংসের ঘটনা ঘটছে, যা দেশের আধ্যাত্মিক সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “শাহ আলী বোগদাদীর (র.) মাজার প্রাঙ্গণে শতবর্ষী বটগাছের ডাল কেটে দেওয়া হয়েছে। এর আগে সিন্নিগাছ নামে পরিচিত এই বটগাছের গোড়ায় মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, গাছের জন্ম হয়েছিল হযরত শাহ আলী বোগদাদীর ব্যবহৃত লাঠি থেকে। বহু ভক্ত এই গাছের নিচে মানত করতেন। বিকল্প ব্যবস্থা থাকলেও, ভক্তরা এটিকে আধ্যাত্মিক চর্চার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।”
 

মোহাম্মদ রোমেল আরও বলেন, “মাত্র পাঁচ মাস আগে মাজার প্রাঙ্গণের এক অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী গান-সংগীত নিষিদ্ধ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন এবং মাজার কর্তৃপক্ষকে হঠকারী কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। মাজারকে সংস্কৃতির অংশ হিসেবেও অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু তারপরও মাজার প্রাঙ্গণে ওয়াজ মাহফিলে গানকে ইসলাম ও কোরআনের শত্রু হিসেবে প্রচারণা চালানো হয়েছে। ভক্তরা অভিযোগ করেছেন, শুধু শাহ আলীর মাজার নয়, সারাদেশে আধ্যাত্মিক চর্চায় ক্রমেই নতুন নতুন বাধা তৈরি হচ্ছে।”
 

সংবাদ সম্মেলনের শেষে কবি ফরহাদ মজহারসহ মাজারের পাগলরা প্রায় ১০ মিনিটের জন্য মাজারের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫