মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের প্রভাব কাটিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে সতর্কতার অংশ হিসেবে, যাতে কোনো নৌযান বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারের সীমায় না যায়, বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী নৌযানগুলো কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় চলবে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি আরও জানান, নাফ নদীতে মাছ ধরা এখনও নিষিদ্ধ রয়েছে, যদিও সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলারগুলো চলাচল করতে পারবে। তবে ট্রলারগুলো যেন বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম না করে, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। ট্রলার মালিক ও জেলেদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে যাত্রীবাহী নৌযান চালানোর জন্য কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বৃহস্পতিবার বিশেষ ব্যবস্থায় সেন্টমার্টিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছানোর জন্য কোস্টগার্ডের পাহারায় সাতটি পণ্যবাহী ট্রলার পাঠানো হয়েছে।
৮ ডিসেম্বর, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর আরাকান আর্মি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে নৌ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় তারা। আরাকান আর্মির বিবৃতিতে জানানো হয়, মংডু অঞ্চলের সামরিক জান্তার বর্ডার গার্ড পুলিশের (৫ নম্বর) শেষ ফাঁড়িটি দখল করেছে তারা এবং এর ফলে অঞ্চলটি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই সংঘাতের কারণে মিয়ানমার প্রান্তের নাফ নদীতে নৌ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে, মংডু শহর দখলের পর গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না, কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে পুনরায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে টেকনাফ সীমান্তের মানুষ। বিস্ফোরণের তীব্র শব্দ না থাকলেও ছোট আকারের গোলাগুলির শব্দ এখনো শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বা তাদের সহযোগী রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর আত্মগোপনস্থল ঘিরে এই গোলাগুলি হচ্ছে।
টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন ও বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ অংশে টহল জোরদার করা হয়েছে।