গরমে ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে যা করবেন

রোদ, গরম, ঘাম, ঘামাচি, পানিশূন্যতা—সব মিলে ত্বকে দেখা দেয় নানা সমস্যা। এ সময় ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে সচেতন থাকতে হবে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অনারারি মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. রায়হান উদ্দিন। লিখেছেন আহমেদ ইমরান
ঘামাচি
গরমে শরীর ঘেমে যায়। ঘাম থেকে জন্ম নেয় ঘামাচি। ঘর্মাক্ত শরীরে সহজেই ত্বকের উপরিভাগে থাকা লোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এতে শরীর থেকে পরবর্তী সময়ে ঘামের বিভিন্ন উপাদান আর বের হতে পারে না। এগুলো ত্বকে থাকা স্তরগুলোতে জমা হয়ে ঘামাচির জন্ম দেয়। ঘামাচি গরমে ঘেমে গলে ত্বকে জ্বালাপোড়া ভাব তৈরি করে। গরমে ঘামাচি থেকে দূরে থাকতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। রোদ ও গরম থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকতে পারলে ভালো। এ ছাড়া আলো-বাতাসযুক্ত স্থানে থাকা, ফ্যানের বাতাসে থাকাও ঘামাচির সমস্যা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। গোসলের সময় পানিতে কিছু নিমপাতা ভিজিয়ে নিলেও উপকার পাবেন।
অ্যালার্জি
গরমে, রোদে, ঘামে অ্যালার্জির সমস্যা বৃদ্ধি পায়। শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালি বেশি থাকে। এ ছাড়া অ্যালার্জির জন্য দায়ী প্রাকৃতিক কিছু উপাদানও এ সময় বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এগুলো ত্বকের সংস্পর্শে এসে অ্যালার্জির সমস্যা তৈরি করে। ত্বক ফুলে ওঠা, লালচে হয়ে যাওয়া, চাকা চাকা হওয়া, গোল লাল বৃত্তের মতো দাগ দেখা দেয়। চামড়া শুষ্ক হয়ে খসখসে দেখায়। অনেক সময় চুলকানি তৈরি করে। যাদের আগে থেকেই ত্বকে অ্যালার্জি তাদের এ সময় বেশি ভোগান্তি হয়। এ জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বাইরে গেলে ত্বক যতটা সম্ভব ঢেকে রাখতে হবে। অ্যালার্জিজনিত খাবার পরিহার করতে হবে। সংক্রমণ বেশি হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।
র্যাশ, ব্রণ, ফোঁড়া
গরমে অনেকের ত্বকে ব্রণ, র্যাশ ও ছোট ছোট ফোঁড়ার সংক্রমণ বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতা। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার না করলে ত্বকের উপরিভাগের লোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এতে শরীরের টক্সিন বের হতে পারে না। ত্বকের ভেতরের স্তরে জমা হয়ে ব্রণ সৃষ্টি করে। তৈলাক্ত ত্বকে এই সমস্যা বেশি হয়। এ থেকে মুক্তি পেতে বারবার ভালো করে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। ত্বকে তেল জমতে দেওয়া যাবে না। সাজে বেশি প্রসাধনীর ব্যবহার করা যাবে না।
ঘামের গন্ধ
গরমে অনেকের শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। ঘামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয়। এই ব্যাকটেরিয়ার জন্যই গন্ধ ছড়ায়। বগলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানের অবাঞ্ছিত লোমও এই দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। ঘামের গন্ধ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার প্রধান উপায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। এ ছাড়া ঘাম যাতে না হয় এ জন্য পাতলা, ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। রোদ, গরম ও ঘাম থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। গরমে ঘামের দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
সানবার্ন
রোদে গেলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকে সানবার্ন তৈরি হয়। ফলে ত্বক পুড়ে যায়, কালো বা লালচে দাগ তৈরি হয়। সানবার্ন থেকে ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি নানা সংক্রমণও তৈরি হতে পারে। সানবার্ন থেকে সুরক্ষায় ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। রোদ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। রোদে গেলে ছাতা ও টুপি ব্যবহার করতে হবে। ফুলস্লিভ জামা, ওড়না দিয়ে ত্বক ঢেকে রাখার চেষ্টা করতে হবে। ত্বকের জন্য উপকারী খাবার, ফলমূল, ডাবের পানি, লেবুর পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫