|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০৭ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:২১ অপরাহ্ণ

‘স্বামীকে জীবিত ফেরত দেবে বলেছিল, সকালে পেলাম লাশ’


‘স্বামীকে জীবিত ফেরত দেবে বলেছিল, সকালে পেলাম লাশ’


কক্সবাজারের টেকনাফে এক সাবেক ইউপি সদস্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মোহাম্মদ ইউনুস সিকদার (৪৫)। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য এবং আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদ টেকনাফ উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
 

বুধবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী ব্রিজের নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরিবারের অভিযোগ

নিহতের স্ত্রী কহিনুর আক্তার বলেন,

“আমার স্বামীকে দাওয়াতের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে আলম শফুর গ্রুপ। তাদের সঙ্গে কোনো টাকার লেনদেন ছিল না। তারা সকালে জীবিত ফেরত দেবে বলেছিল, কিন্তু সকালে পেলাম লাশ। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

নিহতের পরিবার জানায়, মঙ্গলবার রাতে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম শফুর মিয়ার বাড়িতে আমন্ত্রণে যান ইউনুস সিকদার। এরপর থেকে তার খোঁজ মিলছিল না। সকালে ব্রিজের নিচে পানিতে ভাসমান মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

পুলিশের বক্তব্য

টেকনাফ থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন,

“স্থানীয়দের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আর্থিক বা লেনদেনজনিত বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে। ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

রাজনৈতিক সহকর্মীদের দাবি

টেকনাফ পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন,

“আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের সভাপতি ইউনুস সিকদারকে মঙ্গলবার রাতে কমিটির বিষয়ে কথা বলার নাম করে শফুর মিয়ার বাড়িতে ডাকা হয়। পরে সেখানে তাকে হত্যা করে ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়। শফুর মিয়া এখন পলাতক। শুনেছি, তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৭০ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল।”

স্থানীয়দের ধারণা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ স্থানীয় জানান,

“ইউনুস সিকদার নিয়মিত সবুর মিয়ার বাড়িতে যেতেন। সম্প্রতি ইয়াবা সংক্রান্ত পাওনা টাকা নিয়ে শফুর মিয়া, আবছার উদ্দিন, আনোয়ার হোসাইন (লেটাইয়্যা) ও মিজানুর রহমান (বাড়ু মিজান)-এর সঙ্গে তার বিরোধ হয়। মঙ্গলবার রাতে ওই বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে মারধর করা হয় এবং পরে মরদেহ ব্রিজের নিচে ফেলে রেখে সবাই পালিয়ে যায়।”

ছেলের বর্ণনা

নিহতের বড় ছেলে মোহাম্মদ ফারদিন বলেন,

“বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে বাবাকে আটকানো হয়। এরপর ৭০ লাখ টাকা দাবি করে তারা। আমরা পুলিশ নিয়ে গেলে তারা গোলাগুলি শুরু করে, পুলিশও চলে আসে। পরে খোঁজাখুঁজির পর সকালে ব্রিজের নিচে বাবার লাশ পাই। আমরা হত্যায় জড়িত সবার শাস্তি চাই।”

এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫