ভারতের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে অন্তত ২৬ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। মঙ্গলবার মধ্যরাতে আজাদ কাশ্মীরসহ ছয়টি স্থানে এই হামলা চালানো হয়।
বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফফরাবাদে ভারতের "কাপুরুষোচিত" হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে বলে তিনি জানান।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ ভারতীয় নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবেই পাকিস্তানে এই হামলা চালানো হয়েছে। তারা এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। অভিযানের আওতায় পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
তবে ভারত দাবি করেছে, হামলায় পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। তাদের দাবি, পাকিস্তানি বাহিনীর গোলায় ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে তিনজন নিহত হয়েছেন।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান কড়া ভাষায় ভারতের নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি ভারতের সরাসরি আগ্রাসন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তারা উপযুক্ত সময় ও স্থানে এই আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেছে বলেও জানান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এই সংঘর্ষ এখন সরাসরি সামরিক অভিযানের রূপ নিয়েছে।