|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০২:১৫ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:২৫ অপরাহ্ণ

তিন দশক পর দিল্লির ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি


তিন দশক পর দিল্লির ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি


অনলাইন ডেস্ক:-

 

১৯৯৮ সালে শেষবার দিল্লির মসনদে বসেছিল বিজেপি। তখন রাজ্যের শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। এরপর কংগ্রেস দিল্লির ক্ষমতা দখল করে। ২০১৩ সালে প্রথমবার আম আদমি পার্টি (আপ) ক্ষমতায় আসে। কিন্তু ১২ বছরের ব্যবধানে দিল্লিবাসীর মনোভাব পাল্টে গেছে। তিন দশকের খরা কাটিয়ে মোদির ম্যাজিকে আবার দিল্লিতে গেরুয়া ঝড় বইছে। ২৭ বছর পর, ২০২৫ সালে দিল্লির বিধানসভা দখলে নিতে চলেছে বিজেপি।

 

৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের এক্সিট পোল বা বুথফেরত জরিপে বিজেপিকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল আপ ও বিজেপির মধ্যে। ৭০ আসনের বিধানসভায় মোট ৬৯৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যার মধ্যে ৬০৩ জন পুরুষ এবং ৯৬ জন নারী।
 

বুধবার অনুষ্ঠিত ভোটে ৬০.৫৪ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। শনিবার গণনা শুরু হতেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস সঠিক হতে চলেছে। বিজেপির জয়ের ধাক্কায় নাস্তানাবুদ আপ, আর কংগ্রেস টানা তৃতীয়বার শূন্য আসনে রয়ে গেল।

 

সর্বশেষ ফলাফলে দেখা গেছে, ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, ২০২০ সালে ৬২টি আসন জয়ী আম আদমি পার্টি এবার মাত্র ২২টি আসনে লড়াই করছে। কংগ্রেস এখন পর্যন্ত প্রতিটি আসনেই তৃতীয় স্থানের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

 

দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রবেশ সিংয়ের কাছে ৩,১৮২ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। আপের অন্যতম নেতা মণীশ সিসোদিয়া জঙ্গপুরা কেন্দ্রে বিজেপির তারবিন্দর সিংয়ের কাছে প্রায় ৬০০ ভোটে হেরে গেছেন। সত্যেন্দ্র জৈন শকুর বস্তি কেন্দ্রে বিজেপির কর্নেল সিংয়ের কাছে প্রায় ১৮,০০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। একইভাবে সৌরভ ভরদ্বাজও ৩,০০০ ভোটের ব্যবধানে বিজেপির শিখা রায়ের কাছে হেরেছেন।
 

তবে কালকাজি কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী অতিশী প্রায় ৪,০০০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে দলের মানরক্ষা করেছেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার প্রতিদ্বন্দ্বী রমেশ বিধুরীর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়।

 

দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ দীক্ষিত কংগ্রেসের টিকিটে নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি জয়ী হতে পারেননি।

 

নির্বাচনে পরাজয়ের পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, "ক্ষমতার জন্য রাজনীতিতে আসিনি, বিরোধী হিসেবেও মানুষের সেবা করে যাব।" তিনি বিজেপিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, "আশা করি তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। গত ১০ বছরে আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি। এবার আমরা গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।"

 

ভোটের ফল ঘোষণার পর বিজেপি সদর দপ্তরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। সমর্থকরা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আনন্দ করেন, আতশবাজি ফাটান ও লাড্ডু বিতরণ করেন। দুপুরে দিল্লি বিজেপি ঘোষণা দেয় যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাত আটটার দিকে দলের সদর দপ্তরে আসবেন।
 

মোদি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "এই জয় উন্নয়নের জয়, সুশাসনের জয়। দিল্লিবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করেছি এবং করব। দিল্লি বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"
 

অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, "দিল্লিতে মিথ্যাচারের শাসনের অবসান হলো। এই হার অহংকার ও অরাজকতার পরাজয়। দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ।"
 

এই জয়কে বিজেপির জন্য ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করা হচ্ছে, যা দিল্লির রাজনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে চলেছে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫