কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শাহ আলম গ্রেপ্তার

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৯ জুলাই ২০২৫ ০১:৩১ অপরাহ্ণ   |   ৮১ বার পঠিত
কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শাহ আলম গ্রেপ্তার

কুমিল্লা প্রতিনিধি:-

 

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও আকবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
 

সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পীর কাশিমপুর গ্রামের একটি মসজিদের কাছ থেকে তাকে আটক করা হয় বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্য ও বিএনপি নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, সাদা পোশাকে লোকজন একটি কালো গাড়িতে তাকে তুলে নিয়ে যায়। রাতেই এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনা তৈরি করে।
 

মঙ্গলবার সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের এসআই নয়ন কুমার চক্রবর্তী জানান, চলতি মাসের শুরুতে বাঙ্গরাবাজার থানার কড়ইবাড়ি গ্রামে সংঘটিত তিন খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে শাহ আলম সরকারের নাম ২৫ নম্বরে উল্লেখ আছে। তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে।
 

উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই কড়ইবাড়ি গ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় এক পরিবারের তিন সদস্য—রোকসানা বেগম রুবি, তার মেয়ে জোনাকি এবং ছেলে রাসেল নিহত হন। নিহতের আরেক মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
 

শাহ আলম সরকারের ছেলে এবং উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ সরকার মুন্না বলেন, "আমার বাবা নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন, তখন পীর কাশিমপুরের চিশতিয়া মসজিদের সামনে থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা কোনো খোঁজ না পেয়ে আমরা উদ্বেগে ছিলাম। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি একজনের মোবাইল থেকে ফোন করে জানান যে, তাকে ডিবি আটক করেছে।"
 

মুন্নার দাবি, মামলার এজাহারে থাকা ‘শাহ আলম’-এর বয়স ৪৫ এবং পিতার নাম অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে তার বাবার বয়স প্রায় ৬৫ এবং তিনি একজন পরিচিত সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি আরও বলেন, "গ্রামে আরও ৮-১০ জন শাহ আলম রয়েছে। আমার বাবাকে ভুলভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।"
 

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, "শাহ আলম সরকার একজন বর্ষীয়ান নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান। যেভাবে তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হচ্ছে। তিনি যদি অপরাধে জড়িত না থাকেন, তাহলে দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক।"
 

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরপেক্ষ বিচার দাবি করছেন।