আর্থিক অনিয়ম রোধ ও বড় ঋণ তদারকিতে রাখার জন্য ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ড্যাশবোর্ড স্থাপনের করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব৵ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালন বিভাগের প্রধানকে ড্যাশবোর্ড প্রতিনিয়ত তদারকি করতে হবে। পাশাপাশি একক গ্রাহকের সীমা অতিক্রম করে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে ও ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি, এমন ঋণের তথ্য নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ ব্যাপারে সোমবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে তা দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বিতরণ করা ঋণ আদায় না হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানে তারল্য প্রবাহ কমেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যাপ্ত জামানত না রেখে ঋণ দিচ্ছে। একক গ্রাহককে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ঋণসুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। ঋণ দেওয়ার আগে যেমন যাচাই করা হয় না, তেমনি ও ঋণের ব্যবহারও দেখা হচ্ছে না। এতে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালন (আইসিসি) ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এ জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় বলা হয়, এক কোটি টাকা বা তার চেয়ে বড় অঙ্কের যেকোনো প্রকার ঋণ, লিজ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যথাযথ ও বিধিবিধান মানতে হবে। ঋণ বিতরণের আগে নথিপত্র যথাযথভাবে যাচাই করাসহ ঋণের নিয়মকানুন–সংক্রান্ত সব কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিপালন করতে হবে। ঋণ বিতরণের আগে আইসিসির মাধ্যমে প্রাক্-নিরীক্ষা করতে হবে। যেকোনো প্রকার ঋণ, লিজ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সহায়ক জামানত গ্রহণ, একক গ্রাহকের জন্য নির্ধারিত ঋণসুবিধা অনুসরণ, ঋণের গুণগত মান ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ঋণের নিয়মকানুন পরিপালনের বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে তদারকির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ড্যাশবোর্ড স্থাপন করতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন বিভাগের প্রধানকে নিয়মিত ড্যাশবোর্ড মনিটরিং বা তদারিক করতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী সহায়ক জামানত গ্রহণ করা হয়নি, একক গ্রাহকের অনুকূলে প্রদেয় সর্বোচ্চ ঋণের সীমা অতিক্রম হয়েছে, ঋণের ব্যবহারসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পরিপালন হয়নি এবং ঋণের নিয়মকানুন–সংক্রান্ত নীতিমালা পরিপালন হয়নি, এ ধনের ঋণের তথ্য মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগে পাঠাতে হবে।